নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ফখরুল ইসলামের হাজী ভিলা নামক বাড়ির একটি দোকানের শাটারের নিচ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল রক্ত। ভেতর থেকে আসছিল দুর্গন্ধ।মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৫ টার দিকে এমন দৃশ্য দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তখন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে দোকানের শাটার খুলে উদ্ধার করেন আনুমানিক ৪০ বছরের হাত, পা বাঁধা অজ্ঞাত এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ। থানার কদমতলী নয়াপাড়া অনাবিল ব্রিজ সংলগ্ন ভাড়ারীপুল খালপাড় এলাকায় আরফাত ষ্টোর নামক দোকানে নির্মম এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।বাড়ির মালিক ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১ জুন এক ব্যক্তিকে দোকানটি ভাড়া দিই। তার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা ছবি সংগ্রহ করিনি। ওই ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে শুধু মোবাইল নম্বর রেখেছি। দোকানের ভেতরে মৃতদেহ কী করে আসলো আমি বলতে পারব না।’সিদ্ধিরগঞ্জ ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, ‘দোকানঘর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে দোকানটি সিলগালা করা হয়েছে। আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।’সিদ্ধিরগঞ্জে হলোনা গরু বিক্রি, বাড়িতে ফিরলেন ছেলের লাশ নিয়ে।গরুর ব্যবসায়ী ফজলু হাওলাদারের একমাত্র ছেলে ফয়সাল হাওলাদার (১১)কে সঙ্গে নিয়ে ৩৬টি গরু নিয়ে বিক্রি করতে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সিআইখোলা অস্থায়ী গরুর হাটে। স্বপ্ন দেখেছিলেন গরু বিক্রির লাভের টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে আনন্দে ঈদ উদযাপন করবেন। কিন্তু তার সে আনন্দ পরিণত হয় বিষাদে। গরু রেখে ছেলের লাশ নিয়ে ফিরতে হয়েছে নিজ বাড়ি ফরিদপুর জেলাসদর থানার চন্দপাড়া গ্রামে। ফজলু হাওলাদারের ৪ মেয়ে ও একমাত্র ছেলে ছিল ফয়সাল হাওলাদার।জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাট সংলগ্ন ডিএনডি লেকে গোসল করতে যান ফজলু হাওলাদার। এ সময় কখন যে তার ছেলে ফয়সাল লেকের পানিতে তলিয়ে গেছে, তিনি দেখতে পাননি। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে লেকের ঘাটে পোশাক পরে থাকতে দেখে ধারণা করেন তার ছেলে পানিতে তলিয়ে গেছে। খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ফয়সাল হাওলাদারের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এতে গরুর হাট এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের পিতা ফজলু হাওলাদার। ব্যবসায়ী ফজলু হাওলাদারের সঙ্গে আসা আরেক ব্যবসায়ী লিটন খান জানান, ‘দুপুর ২ টা সময় লেকের পানিতে গোসল করতে নামে ফয়সাল। তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি ও হাটের মাইকে ঘোষণা দিয়েও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। লেকের ঘাটে তার কাপড়চোপড় পরে থাকতে দেখে আমরা বুঝতে পারি সে পানিতে পড়ে গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই।’নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি লিডার সিদ্দিকুর রহমান জানান, ‘গোসল করতে গিয়ে ছেলেটি আর উঠতে না পেরে পানিতে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে এসে ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর লাশ উদ্ধার করি।’ঘটনাস্থলে আসা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শাহ আলম জানান, নিহতের স্বজনদের কোনো অভিযোগ নেই। তাই লাশ নিজ গ্রামে নিয়ে গেছে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর