বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দ্বীপ জেলা ভোলায় ডুবে গেছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার মানুষ। তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে গরু-ছাগলসহ গৃহপালিত পশু। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় কোনো প্রাণহানির সংবাদ পাওয়া যায়নি।বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ৮টার দিকে ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাদ জাহান সময়ের কণ্ঠস্বরকে নিশ্চিত করেছেন, জেলায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে জেলা জুড়ে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া থাকলেও দুপুরের পর থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী। ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে জোরেসোরে বইতে শুরু করে দমকা বাতাস। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিকেলের দিকে জেলার তজুমদ্দিন উপজেলায় নির্মাধীন একটি জলকপাট (স্লুইসগেট) ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম।এছাড়াও জেলার বিচ্ছিন্ন কয়েকটি চর পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে কৃষকের গরু-ছাগলসহ বেশকিছু গৃহপালিত পশু, পুকুর ও ঘেরের মাছ। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঢালচর, চরকুকরি-মুকরি, চর পাতিলাসহ বেশ কয়েকটি চরাঞ্চলের মানুষ। কিছু এলাকার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে।ভোলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাদ জাহান সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলায় কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে ঢালচর এলাকায় কৃষকের ৫টি গরু এবং ৩টি ছাগলসহ বেশকিছু গৃহপালিত পশু মারা গেছে এবং স্রোতে ভেসে গেছে। বিকেলের দিকে তজুমদ্দিনে একটি জলকপাট ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, এই ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় প্রায় চারশো ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বেশকিছু পুকুর ও মাছের ঘের ডুবে গেছে। প্রতিটি উপজেলার কিছু এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে আমাদের প্রস্তুত রাখা ৮৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে তেমন কোনো মানুষ আসেনি। শুধুমাত্র সদর উপজেলার চর চটকিমারা এলাকায় একটি স্কুলে বেশকিছু মানুষ এসেছে। এছাড়াও ঢালচর, চর মোজাম্মেল ও চর পাতিলার কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ এসেছে। তবে এ চরগুলো বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখনো সেখানে শুকনো খাবার পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।সার্বিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি সময়ের কণ্ঠস্বরকে আরও বলেন, আমরা সবসময় জেলার সব জায়গার খোঁজখবর নিচ্ছি। আমরা চাই যে, যাতে করে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে। যেখানে আমরা খারাপ অবস্থার কথা শুনছি, সেখানেই আমরা আমাদের টিম পাঠাচ্ছি। তবে, তীব্র বাতাস এবং ভারী বর্ষণের কারণে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পানিবন্দি মানুষদেরকে শুকনো খাবার দেওয়া হবে।পিএম
Source: সময়ের কন্ঠস্বর