বৃষ্টির রাতে তৃষ্ণা মেটাতে গিয়েছিলেন কলসি থেকে পানি খেতে। জানতেন না, সেই পানির খোঁজেই টিনের ঘরের গায়ে লেগে থাকা মৃত্যুর ফাঁদ ছুঁয়ে যাবেন তিনি। মুহূর্তেই বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারান দুই সন্তানের মা মনোয়ারা বেগম (৪৫)।চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতি ইউনিয়নের উত্তর ব্রাহ্মণডেঙ্গা গ্রামে সোমবার (২6 মে) দিবাগত রাতে ঘটে এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা। নিহত মনোয়ারা বেগম ছিলেন স্বামী পরিত্যক্তা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাপের বাড়িতে দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। পরিবারটি টিনশেড ঘরে থাকত। স্থানীয়রা জানান, সেদিন রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ করে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে তার ছিঁড়ে এসে মনোয়ারার টিনশেড ঘরের গায়ে পড়ে। এতে ঘরটি পুরোপুরি বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। রাতে কলসি থেকে পানি খেতে যান মনোয়ারা। পানির কলসি ঘরের ভেতরেই ছিল। কিন্তু কলসি ধরতেই বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে পুরো ঘর বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। হাত দিয়ে কলসি ধরার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি।’ নিহতের ভাই নজির আহমদ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। ছেলেদের মানুষ করাই ছিল মনোয়ারার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। বাবার বাড়িতে কষ্ট করে দিন চললেও সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ার আশায় থেমে থাকেননি তিনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ব্রাহ্মণডেঙ্গা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বৃষ্টি হলেই প্রায়ই তার ছিঁড়ে পড়ে। এ বিষয়ে একাধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগে অভিযোগ করলেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মনোয়ারার মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সমাজের জন্যই শোক ও প্রশ্ন রেখে গেল—যেখানে ঘরই নিরাপদ নয়, সেখানে নিরাপত্তা কোথায়? এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর