ঈদুল আজহার আর মাত্র ক’দিন বাকি। কোরবানির প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বরগুনার আমতলীর কামাররা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামারপল্লীতে চলছে ধারালো দা, ছুরি, চাপাতি তৈরি ও শান দেওয়ার কাজ।মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে আমতলী উপজেলার বিভিন্ন বাজার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, চারদিকে হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খণ্ড, আবার কেউ শান দিচ্ছেন ছুরি কিংবা বঁটি-চাপাতি, কেউবা আবার কয়লার আগুনে দিচ্ছেন বাতাস। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ভিড় করছেন কামারপট্টিতে। কেউ পুরনো দা-ছুরি শান দিচ্ছেন, কেউ আবার নতুন কিনছেন। কামারদের মুখে হাসি, কারণ বছরের সবচেয়ে বেশি আয় হয় এই সময়টাতেই।স্থানীয় কামার মানিক কর্মকার বলেন, ‘ঈদের ১০-১১ দিন আগে থেকেই কাজের চাপ বেড়ে যায়। এখন দিনে প্রায় ২০-২৫টা দা বা ছুরি শান দিতে হয়।’ দামের বিষয়ে কামাররা জানান, এ বছর দা-ছুরির দাম কিছুটা বেড়েছে। সাধারণ দা বিক্রি হচ্ছে ২৫০–৩০০ টাকা, ছুরি ১০০–১৫০ টাকায়, চাপাতি ৪০০–৫০০ টাকা পর্যন্ত। ঈদের আর কয়েক দিন বাকি। এর আগ পর্যন্ত বিরামহীনভাবে চলবে কামারদের কোরবানির প্রস্তুতির এই শ্রমজীবন।একই কথা জানান কামার তপন কর্মকার। তিনি বলেন, ‘গরম, ধোঁয়া, ঘাম—সবকিছু সয়ে কাজ করছি। কারণ ঈদের মৌসুমই আমাদের মূল উপার্জনের সময়।’স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইমরান হোসাইন বলেন, ‘এই সময় কামারপট্টির উপরই নির্ভর করতে হয়। ভালো ধার দিলে কোরবানির কাজও সহজ হয়।’কামাররা জানিয়েছেন, এবার দা, ছুরি ও চাপাতির দাম কিছুটা বেড়েছে লোহা ও কয়লার মূল্য বৃদ্ধির কারণে। তবু ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।আমতলী উপজেলার চুনাখালী বাজারের আরেক ক্রেতা লাল গাজী বলেন, ‘ঈদে নামাজ শেষে আমরা নিজেরাই পশু জবাই করি। তাই লৌহজাত সামগ্রী কিনতে এসেছি। এসে শুনতেছি গত বছরের চেয়ে এবার দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন।’এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর