বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায মারাইংতং জাদীর একটি নির্মাণাধীন বুদ্ধ মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিবার (২৫ মে) সকালে দুই শতাধিক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ আলীকদম উপজেলা পরিষদ সড়ক পথে এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন।মানববন্ধনের শেষে, তাঁরা আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।স্মারকলিপিতে আলীকদম উপজেলার এলাকাবাসী ও ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী মারাইংতং জাদীর পবিত্রতা বিনষ্টের অপচেষ্টার কথা তুলে ধরেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান মারাইংতং জাদী বর্তমানে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর দ্বারা পরিকল্পিতভাবে বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষক উথোয়াই মার্মা জয় এবং রংরং ইকো রিসোর্টের মালিক অক্সাস মামুন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সাঙ্গু মৌজার হেডম্যানকে ম্যানেজ করে মারাইংতং জাদীর জমি দখলের চক্রান্ত করছেন এবং সেখানে রিসোর্ট ব্যবসা চালু করতে চান। মূলত জাদীর জমিটি আলীকদম ও লামা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত।স্মারকলিপিতে মারাইংতং জাদীর পবিত্রতা রক্ষায় বেশ কয়েকটি উদ্বেগের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অপরিকল্পিত পর্যটন। জাদী ও সংলগ্ন এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টা। পরিবেশ দূষণ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কার্যকলাপ। বিশেষ করে উল্লেখ করা হয় গত ২১শে মে আনুমানিক সাড়ে ৩ঘটিকায় এই চক্রের দ্বারা মারাইংতং জাদী মহা বৌদ্ধ বিহার সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্মাণাধীন বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা। এই ঘটনায় স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং এ ব্যাপারে আলীকদম থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ২৮৫নং সাঙ্গু মৌজার হেডম্যান চংপাত ম্রোকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়।মারাইংতং জাদীর বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করা ও মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনার সাথে জড়িত উথোয়াই মার্মা জয়, অক্সাস মামুন, চংপাত ম্রো এবং অন্যান্য অভিযুক্ত বিরুদ্ধে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার,জোড় দাবি জানান।স্মারকলিপিতে মারাইংতং জাদীর প্রতিষ্ঠাতা উ উইচারা ভিক্ষুসহ ৫ শতাধিক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী স্বাক্ষর করেন। মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের উদ্বেগের কথা জোরালোভাবে তুলে ধরেন এবং জেলা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর