ইসরায়েল প্রতিদিনই গাজায় যুদ্ধাপরাধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।বুধবার (২১ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।কান নিউজ-কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে—এটি নতুন কিছু নয়। কিন্তু পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন ইসরায়েলিরা এমন অপরাধ করছে, যেখানে পুলিশ বা সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে না, বরং অনেক সময় চোখ বুজে থাকে।”এহুদ ওলমার্ট ইসরায়েলের বর্তমান ডানপন্থি সরকারের নেতাদের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচের সেই বক্তব্যকে ‘গণহত্যার আহ্বান’ হিসেবে আখ্যা দেন, যেখানে তিনি (স্মোটরিচ) উত্তর পশ্চিম তীরের হুওয়ারা গ্রামটি পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।ওলমার্ট বলেন, “যদি কেউ গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার ডাক দেয়, সে মূলত গণহত্যারই ডাক দিচ্ছে।”২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ওলমার্ট বলেন, গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ কোনও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যহীন রাজনৈতিক যুদ্ধ। এই যুদ্ধ গাজায় আটক থাকা বন্দিদের ফিরিয়ে আনবে না বরং আরও ইসরায়েলি সেনার প্রাণহানি ঘটাবে।ইসরায়েলের হিসাব মতে, গাজায়িএখনও ৫৮ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হয়। হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের অভিযানে প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে গাজায় নেওয়া হয়েছিল, যাদের অনেককে পরে মুক্তি দেওয়া হয়।এদিকে, ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এখনও ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এসব বন্দিকে নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসা অবহেলার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।এহুদ ওলমার্ট বলেন, “পশ্চিম তীরের সামারিয়া কাউন্সিলের প্রধান যখন গণহত্যার ডাক দেয় কিংবা কোনো মন্ত্রী যখন বলে, ‘গাজায় একটি শিশুকেও বাঁচিয়ে রাখা যাবে না’—তখন আর কেউ বিস্মিত হয় না। এটা কতটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে, তা সরকার অনুধাবন করতে পারছে না।”তিনি আরও বলেন, “সরকারের সামরিক নীতির জন্যই বহু নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে।”উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।এমআর-২
Source: সময়ের কন্ঠস্বর