চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ব্যবসাকেন্দ্রিক এলাকায় চাঁদা না পেয়ে এক ব্যবসায়ী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নেতাকে ‘যুবলীগ কর্মী’ সাজিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় এক যুবদল নেতা। ঘটনাটি রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।ভুক্তভোগী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চাক্তাই এলাকার বাসিন্দা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সোহাগের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন যুবদল নেতা দিদার ও তার ভাই, যুবলীগ পরিচয়ধারী আজগর। চাঁদা না পেয়ে তারা সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেন এবং তার পরিবারকে নিয়মিত হুমকি দিতে থাকেন।পরবর্তীতে আজ ১৮ এপ্রিল (রোববার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন যুবদল নেতা দিদার। সেখানে তিনি সোহাগকে “আওয়ামী লীগ সমর্থক যুবলীগ কর্মী” পরিচয়ে উপস্থাপন করেন এবং তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। তবে সোহাগের প্রকৃত রাজনৈতিক পরিচয় সম্পূর্ণ ভিন্ন।তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মো. সোহাগ দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বাকলিয়া শাখায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পর বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। তার পিতা সালাউদ্দিন সওদাগর ইসলামী আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেতা।এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম সময়ের কন্ঠস্বর-কে বলেন, “সোহাগ আমাদের দলের একজন পরীক্ষিত, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে—এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা দাবি করি।”এ ঘটনার পর চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা জানান, চলমান রাজনৈতিক সংকটের সুযোগে কিছু চক্র এলাকায় চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করছে।এলাকার একজন জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সময়ের কন্ঠস্বর-কে বলেন, “ব্যবসা করতে গেলে এখন রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।”স্থানীয় ইসলামি রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইসলামী আন্দোলনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রতিপক্ষের একাংশ এ ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হচ্ছে। এতে শুধুমাত্র ব্যক্তি নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং দলীয় সৌহার্দ্যও।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর