মিতালী (ছদ্মনাম) এক সন্তানের জননী। তার স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর। নদীতে মাছ ধরা থেকে শুরু করে যখন যে কাজ পায় তা করেন। এবং কি বাবার সাথে পালা গানে অংশ গ্রহন করে সংগ্রামী জীবন পার করছেন তিনি।তবে প্রতিদিনের মত শুক্রবার (১৬ মে) ভোর রাতে মিতালীর স্বামী সুমন নদীতে মাছ ধরতে যায়। তার কিছুক্ষন পরেই একই এলাকার লম্পট পলাশ হাওলাদার ওরফে দা পলাশ সুমনের ঘরে প্রবেশ করে তার স্ত্রী মিতালীর মুখ চেপে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।এক পর্যায়ে তাকে গৃহবধূকে ধর্ষনের চেষ্টা চালালে ছদ্মনাম মিতালী ডাক চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসলে লম্পট দা পলাশ কৌশলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, র্দীঘ বছর ধরে দা পলাশ এলাকার বিভিন্ন ঘরে পাশে গোপনে লুকিয়ে থেকে সুযোগ বুঝে ছোট থেকে বিভিন্ন বয়সের নারীদের সর্বনাশ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।তারা আরো বলেন, দা পলাশের আতঙ্কে নারীদের দিন কাটছে এই মোহাম্মাদপুরে। পলাশ একের পর এক ধর্ষনের চেষ্টা আর নারীদের জিম্মি করে সর্বনাশ করার ঘটনায়, এখন ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের মোহাম্মদপুর এলাকার সবার মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে।শুধু তাই নয় পলাশ হাওলাদার ওরফে দা পলাশের বিরুদ্ধে মাদক বানিজ্য, নারীদের শ্লীলতাহানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে।ভুক্তভোগী একাধিক নারী জানান পলাশে অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী থেকে শুরু করে অধিকাংশ নারীরা।পলাশ হাওলাদার ওরফে দা পলাশ নগরীর ৫ নং ওয়ার্ড পলাশপুরের মোহাম্মদপুরে স্থানীয় বাদশা হাওলাদারের ছেলে।তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিজেকে অওয়ামী লীগের নেতা দাবি করে এলাকায় দাপট দেখিয়ে ছোট বড় যত অপরাধ ঘটনা তৈরি হতো সব গুলোতেই পলাশকে দেখা যেতো। একাধিক ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, আমাদের এলাকা মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন বিধায় পুলিশের নিয়মিত কোন টহল থাকে না। আর যদি কখনো পুলিশ অভিযান পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে এই এলাকায় আসে, তাহলে মাদকসেবী এবং ব্যাবসায়ীরা কীর্তনখোলা নদীর পাড় থেকে সুকৌশলে পালিয়ে যায়।তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, পলাশ এবং অন্যান্য মাদক ব্যাবসায়ীরা গভীর রাত পর্যন্ত মাদকের কেনাবেচা চালিয়ে থাকেন এখানে। তাদের বিভিন্ন মুখি অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে সাধারণ বাসিন্দারা। তাই ভয়ে কেউ মুখ খুলে না কেউ। কারন হলো তিনি আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার দাপটে এলাকায় রাজত্ব করে বেড়াতেন।৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তার আপন ভাই ওয়ার্ড বিএনপির নেতা দাবি করে এলাকায় চলছে। তাই তাদের ভয়ে নীরব এলাকাবাসী। তবে এদের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।এদিকে সম্প্রতি শুক্রবার ভোররাতে স্থানীয় বাসিন্দা আ: রহমান খলিফার পুত্র সুমন খলিফা গভীর রাতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলে সকাল আনুমানিক ৬ টার দিকে তার বাসায় প্রবেশ করে পলাশ ওরফে দা পলাশ সুমনের স্ত্রী মিতালির শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।এসময় মিতালি ডাক চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে আসায় পলাশ ওরফে দা পলাশ দৌড়ে পালিয়ে যায়।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মিতালির স্বামী সুমন শরীফ বাদী হয়ে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানায় একটি শ্লীলতাহানী ও ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগ এনে একটি এজাহার দায়ের করেন পলাশ হাওলাদার ওরফে দা পলাশ এর বিরুদ্ধে।শ্লীলতাহানীর অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল নিসাদ জানান, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।নারীর প্রতি এমন সহিংসতায় আতঙ্কিত স্থানীয়রাও বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলের একাধিক ব্যাক্তির সাথে কথা হলে তারা বলছেন, আইনের কঠোর বাস্তবায়নের পাশাপাশি দরকার পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা। যাদের মধ্যে পারিবারিক শিক্ষা নেই তারাই এরকমের অপরাধ করে যাচ্ছে। তবে সুমনের স্ত্রীকে শ্লীলতাহানী ও ধর্ষনের চেষ্টার ঘটনাটি পুরো এলাকাজুড়ে রয়েছে আলোচনায়।ফুঁসে উঠতে শুরু করেছেন পলাশের লালসার শিকার হওয়া ভুক্তভোগী নারীরা সহ গোটা এলাকা।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর