ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে নানা বিতর্ক ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। মামলা থাকার পরও কীভাবে কাদের সহায়তায় আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। এবার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের একটি ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তার ছোট রিয়াদ আহমেদ তুষার। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে রিয়াদ আহমেদ তুষার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এক পোস্টে আবদুল হামিদ কোন পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়েছেন তা পরিষ্কার করেন। পোস্টে আবদুল হামিদ হুইলচেয়ারে বসে রয়েছেন এমন একটি ছবিও জুড়ে দিয়েছেন তিনি।ফেসবুক পোস্টে রিয়াদ আহমেদ তুষার লিখেছেন, ‘এরকম একটা পোস্ট দিবার জন্য দুঃখিত। ৮২-৮৩ বৎসরের একজন বয়স্ক লোক যিনি কি না অসুস্থতার কারণে এখন ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। ২ ঘণ্টা বসে থাকতে পারছেন না, বাধ্য হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন। ওজন কমতে কমতে ৫৪ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে নিজের কোনো প্যান্ট পরতে পারছেন না। বাধ্য হয়েই লুঙ্গি পরে থাকতে হচ্ছে। যাকে বেটার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারগণ বোর্ড করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য। যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হবার পর প্রকাশ্যে বলেছেন যে, উনি আর পলিটিকসের সঙ্গে জড়িত হবেন না। তারপর পলিটিকসের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত হননি। আবার, যেখানে শত শত লোক বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে নিয়মিত থাইল্যান্ড যাচ্ছে, সেখানে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য তিনি আসতেই পারেন।’রিয়াদ আহমেদ তুষার আরও লেখেন, ‘অথচ এ ঘটনাটাকেই এত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যা কল্পনাতীত। বানিয়ে মিথ্যা বলতে পারাটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে কিছু লোক। সকলেই দোয়া করবেন যেন তিনি সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে পারেন, ইনশাআল্লাহ।’‘আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তবে আল্লাহর লানত আমার ওপর পড়ুক। আর যারা মিথ্যা প্রচার করছে, তারা যদি তাদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তওবা না করে, তবে তাদের সবার ওপর আল্লাহর লানত পড়ুক। আমিন ইয়া রাব্বুল আলামিন।উল্লেখ, আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর তিনি ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তাঁর মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন ছাড়ার পর আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তাঁর বাসায় উঠেছিলেন।ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি হয়।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর