এক দফা এক দাবি, ভিসি তুই কবে যাবি’, ‘বারে বারে মামলা, এবার গদি সামলা’, ‘ক্যাম্পাস আমার গোল্লায় যায়, ভিসি কেন ঢাকায় রয়’, ‘মামলাবাজ ভিসির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সাত মাস চলে গেল, উন্নয়নের কি হলো’, ‘স্বৈরাচার ভিসি আর না আর না’, ‘এক দুই তিন চার, এই মুহূর্তে গদি ছাড়’ এই স্লোগান নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানা কর্মসূচি পালনের পর এবার কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ মে) ববিতে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে পাঠদান বন্ধসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এ আগে (১১ মে) শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিভাগের শিক্ষকদের কাছে চিঠি প্রদান ও রাতে মহাসড়কে মশাল মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের চেয়ারম্যানসহ সকল শিক্ষকদের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছি। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। শাটডাউন কর্মসূচি উপলক্ষে রোববার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করা হয়েছে।শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, পরিবহণ সেবা, লাইব্রেরি ও মেডিকেলসহ অন্যান্য জরুরি সেবা এর আওতামুক্ত থাকবে। অব্যাহত থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রমের শাটডাউন। স্বৈরাচার দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের পক্ষ থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলীর প্রতি উন্মুক্ত আহ্বান শিরোনামে দেয়া খোলা চিঠিতে বলা হয়, আমাদের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় গত ২৬ দিন ধরে চলমান আন্দোলন সবিশেষ ১ (এক) দফা তথা এই অপেশাদার, মামলাবাজ, অযোগ্য উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উপনীত হয়েছে। এই দাবি আদায়ে আমরা শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ ও আপসহীন। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনির্ধারিত চলমান সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ব্যতীত সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে. সরকার আমাদের দাবির প্রতি এখন পর্যন্ত কর্ণপাত করেনি। দীর্ঘদিন আন্দোলনের কারণে আমাদের আর পিছনে ফিরে যাওয়ার ন্যূনতম জায়গা নেই। তাই দাবি আদায়ের এই আপসহীন লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে আমরা আজ ১২ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা করেছি।চিঠিতে আরও বলা হয়, আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শীঘ্রই এই বাকরুদ্ধ পরিবেশ থেকে মুক্তি পেয়ে সৃজনশীল গতিময় অ্যাকাডেমিক জীবনে ফেরত যাবো বলে আশাবাদী। ততক্ষণ আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ঘোষিত কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে আপনাদের পূর্বনির্ধারিত সকল অ্যাকাডেমিক ক্লাস বন্ধ রাখার সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। সকালের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শিক্ষকদেরকে বিষয়টি অবহিত করেছি যেন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তারাও ক্লাস বর্জন করেন।আন্দোলনকারী সুজয় শুভ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। উপাচার্য যদি অতিসত্বর পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরিমনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেননি।উল্লেখ্য,চলমান কর্মসূচিতে ক্যাম্পাসে ও মহাসড়কে মশাল মিছিল, মহাসড়ক অবরোধ, ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি, উপাচার্যের বাসভবনে তালা, সংবাদ সম্মেলন সহ নানা কর্মসূচি করা হলেও উপাচার্য পদত্যাগ না করেও তিনি এখনও রয়েছে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর