ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেন পোপ ফ্রান্সিস। সেই সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি নাগরিকদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রয়টার্স ও স্কাই নিউজ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোপ লিও রোববার (৩১ মার্চ) খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইস্টার সানডে উপলক্ষে এক ভাষণকালে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও সমস্ত ইসরাইলি বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে একটি ‘প্রকৃত ও স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, গাজায় মানবিক সাহায্যের প্রবেশ নিশ্চিত করা হোক। সেই সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর আটক ইসরাইলি বন্দিদের দ্রুত মুক্তি ও গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আরও একবার আহ্বান জানাই। এই ধর্মীয় নেতা আরও বলেন, আমরা শিশুদের চোখে দুর্ভোগের ছায়া দেখছি, শিশুরা যুদ্ধক্ষেত্রে হাসতে ভুলে গেছে। শিশুরা তাদের চোখ দিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা করে: কেন? কেন এত মৃত্যু? কেন এত সর্বনাশ? যুদ্ধ সবসময় একটি অযৌক্তিক বিষয় এবং এটা সবার জন্য পরাজয়।এ সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান স্মরণ করে পোপ লিও তার পূর্বসূরি পোপ ফ্রান্সিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘চলমান সহিংসতা ও যুদ্ধগুলো যেন এক খণ্ড খণ্ড তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’।ইদানিং ৮৭ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিসের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ফলে জন পরিসরে বের হওয়া ও সভায় বক্তব্য দেয়ার মতো কর্মকাণ্ড কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। গুড ফ্রাইডের অনুষ্ঠানও বাতিল করছেন যেটাতে আগে নিয়মিতই অংশ নিতেন। তবে ইস্টার সানডে’র মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নেন পোপ। একইভাবে ভ্যাটিক্যানের সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে রোববারের জনসমাগমে যোগ দেন তিনি। ইস্টার সানডে পালন করা হয় গুড ফ্রাইডের পরের রোববার। খিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, এই দিনে যিশু খ্রিস্ট মৃত অবস্থা থেকে বেঁচে উঠেছিলেন। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের পর পোপ তার গাড়িতে করে সেন্ট পিটারস স্কয়ার এবং ভ্যাটিকানকে টিবের নদীর সাথে সংযোগকারী রাস্তাটি ঘুরে দেখেন এবং হাজার হাজার লোককে অভিবাদন জানান যারা তাকে দেখতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর দেয়া ভাষণে ফ্রান্সিস বলেন, এবার তার প্রার্থনা বিশেষত ইউক্রেন ও গাজার নিরীহ মানুষগুলোর জন্য এবং যারা যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে। শিশুদের জন্য প্রার্থনা করে তিনি বলেন, ‘কীভাবে হাসতে হয় তারা তা ভুলে গেছে। গাজা যুদ্ধে মৃত্যু ও ধ্বংসের জন্য বারবার দুঃখ প্রকাশ করেন পোপ। গত প্রায় ছয় মাস ধরে গাজায় নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরাইল। এই সময়ের মধ্যে সংঘাতের প্রথম দিকে মাত্র ৭ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। এরপর আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। তবে চলতি সপ্তাহে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে। রোববার (৩১ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ইসরাইলের সঙ্গে নতুন দফায় আলোচনার আয়োজন করেছে মিশর। এর মধ্যেই তীব্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন ও হত্যাযজ্ঞ ১৭৭তম দিনে গড়িয়েছে। নির্বিচার বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৮২ জনে। এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর