গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা কিশোরগঞ্জের সাধারণ মানুষের। রোদের প্রখরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। প্রতিদিনই তাপপ্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে। এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। পেটের দায়ে অত্যধিক গরম উপেক্ষা করে যেতে হচ্ছে কাজে। কেউ কেউ ঘরে বসে অলস সময় পার করছেন।শনিবার (১০ মে) বিকেল ৩ টায় কিশোরগঞ্জ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই তেঁতে উঠছে পথঘাট। গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে অনেকে ছাতা মাথায় দিয়ে বাইরের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সারছেন। তবে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। তবে স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী কয়েকদিন এ অঞ্চলে এমন তাপদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এজন্য জনসাধারণকে দুপুরের সময় খুব প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এদিকে তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধদের কাছে গরম এখন অসহনীয় অবস্থায়। আবার ঘরের ভেতরেও শান্তি নেই, গরমের কারণে সবাই ঘামছে, পানিশূন্যতা দেখা দিয়ে অনেকেই অসুস্থ বোধ করছেন। হাসপাতালে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশি করে পানি পান, অযথা বাড়ির বাইরে না যাওয়া, সড়কে বা রাস্তায় যত্রতত্র খাবার গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে বাইরে আগুনে পোড়া গরমে জীবন দুর্বিষহ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠছে শ্রমজীবী মানুষরা। যেখানে সেখানে ছায়া মানুষ বিশ্রাম নিচ্ছে, স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত বা ডাব খাচ্ছে। সব মিলিয়ে গরমে প্রভাব ফেলছে জীবনযাত্রায় এই তাপপ্রবাহ। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। তাদের দিনের আয়ে ভাটা পড়েছে। রাস্তায় জনগণের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হয়নি সাধারণ মানুষ। এতে আয়ে ভাটা পড়েছে রিকশা ভ্যান ও অটোচালকদের। পূর্বের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে প্রতিদিনের ইনকাম বলে জানাচ্ছে তারা। সদর উপজেলার যশোদল নোয়াপাড়া গ্রামের রিকশা চালক হবিল মিয়া, রশিদ মিয়া, আবদুল কদ্দুস জানান, গরমে তাদের কাজ করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। তবু পেটের দায়ে বের হতে হচ্ছে। তীব্র রোদ উপেক্ষা করেও সড়কে থাকলে, তেমন যাত্রীর দেখা পাচ্ছেন তারা। কারণ সাধারণ মানুষ অতি জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. অভিজিত শর্ম্মা বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। সবগুলো হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে তৈরি রাখা হয়েছে। চিকিৎসাসেবার কোনো ত্রুটি নেই। তবে রোগীর চাপ বাড়ছে। ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব এখনও তেমনভাবে দেখা দেয়নি। জেলায় এখনও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। জেলার সব হাসপাতালগুলোতে কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইন ও অন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসামগ্রী পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর