চট্টগ্রামে এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চাহিদা পৌঁছেছে প্রায় ৯ লাখে। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে পশুর মোট চাহিদা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি। সেই হিসেবে কোরবানিদাতার সংখ্যা বেড়েছে ৬৭ হাজার ২৯৭ জন।এদিকে চলতি বছর মাঠ পর্যায়ে মজুত রয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৮২টি পশু। ফলে ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার পশুর। তবে এই ঘাটতি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চাহিদা অনুযায়ী ঘাটতি পূরণে আশপাশের জেলা কিংবা উত্তরাঞ্চলের খামারিদের কাছ থেকে পশু সরবরাহের ব্যবস্থা থাকায় বড় কোনো সংকট হবে না বলে মনে করছেন তারা।চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, “বর্তমানে পশু মজুত মোটামুটি সন্তোষজনক। শেষ মুহূর্তে আশপাশের জেলা থেকে পশু প্রবেশ করবে। ফলে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।”চট্টগ্রামে এবার মজুত পশুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে গরু, সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৩টি। এর মধ্যে রয়েছে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৯টি ষাঁড়, ১ লাখ ২১ হাজার ৬৭০টি বলদ, ৪৯ হাজার ১১৪টি গাভি। এছাড়া মজুত রয়েছে ৬৪ হাজার ১৬৩টি মহিষ, ২ লাখ ৫ হাজার ১৭৪টি ছাগল, ৫৫ হাজার ৬৯৭টি ভেড়া এবং অন্যান্য প্রজাতির পশু ৩৫টি।চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি পশুর চাহিদা সন্দ্বীপে—প্রায় ৮৫ হাজার ২৫০টি। গত বছরও এই উপজেলাই ছিল শীর্ষে, কোরবানির সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ৬৩৮টি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মীরসরাই (৫৮,৭৮০টি) এবং তৃতীয় স্থানে পটিয়া (৭০,১৮০টি)।অন্যদিকে সবচেয়ে কম পশুর চাহিদা দেখা গেছে বোয়ালখালী উপজেলায়—২৯ হাজার ৭৪২টি। অন্যান্য এলাকার মধ্যে এবার আনোয়ারা ৬৩ হাজার ৪২৮টি, বাঁশখালী ৫৯ হাজার ৪০৪টি, ফটিকছড়ি ৬৯ হাজার ৪১৯টি, রাঙ্গুনিয়া ৫০ হাজার, সাতকানিয়া ৪৫ হাজার ৩৭১টি, হাটহাজারী ৪৪ হাজার ৮৯০টি, লোহাগাড়া ৩৮ হাজার ০৫৯টি, কর্ণফুলী ৩৩ হাজার ৫৩৩টি, রাউজান ৩৪ হাজার ৩০২টি, চন্দনাইশ ৪৭ হাজার ০৪টি, কোতোয়ালী ৩০ হাজার ৬৯৮টি, ডবলমুরিং ৩৭ হাজার ৫০০টি এবং পাঁচলাইশ ৪১ হাজার ৫৫৯টি।কোরবানির ঈদকে ঘিরে কাঁচা চামড়া সংগ্রহে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে চট্টগ্রামের আড়তদাররা। চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন সময়ের কন্ঠস্বর-কে জানান, “প্রতি বছর আমাদের মূলধনের অভাব থাকে। ব্যাংক ঋণ না পাওয়ায় আত্মীয়–স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার করে চামড়া কিনতে হয়। অনেক সদস্য এই লোকসানের কারণে ব্যবসা ছেড়েও দিয়েছেন।”তিনি আরও বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে কোরবানি বাড়ছে, কিন্তু চামড়ার পরিমাণ সেই অনুপাতে পাওয়া যায় না। ফলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এবারও আমরা সাধ্যমতো প্রস্তুতি নিচ্ছি।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর