পাবনার ভাঙ্গুড়ায় স্থানীয় কাউন্সিল আদালতগুলো অচল হয়ে পড়ায় বাড়ছে নন-ফৌজদারি অপরাধ। ফলে আগে যে অভিযোগ এজলাসে বিচারের মাধ্যমে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সহজেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যেত এখন আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে ক্ষতিগ্রস্তদের পুলিশের কাছে দৌড়াতে হচ্ছে, অপরদিকে প্রতিপক্ষের ওপর মিথ্যা মামলা চাপিয়ে হয়রানির প্রবণতাও বেড়ে গেছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, নারী ও শিশু সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ, প্রথাগত জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও অন্যান্য হালকা দেওয়ানি মামলা, ঋণ সংক্রান্ত ও পশু দ্বারা ফসলের ক্ষতি, চুরি, মারামারি অর্থাৎ ক্ষুদ্র নন-ফৌজদারি অপরাধের বিচার আগের মত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে হচ্ছে না।কারণ হিসেবে জানা গেছে, ২০২৪ সালে দেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা নানামুখি চাপের কারণে গ্রাম আদালতের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এছাড়া আওয়ামী সরকারের সময় বিতর্কিত নির্বাচনে তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাদের প্রতি ইউনিয়নবাসীদের আস্থার সংকটও দেখা দিয়েছে।উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুবাইদা আরিফীন মানজিলা জানান, ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর গ্রাম আদালতের এজলাস খুব একটা বসে না। অভিযোগকারীর আবেদনপত্র দাখিলের সময় ফৌজদারি মামলা হলে ১০ টাকা এবং দেওয়ানি মামলা হলে ২০ টাকা ফিস জমা নেওয়া হয়। পরে এজলাস বসিয়ে বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মামলার রায় দেওয়া হয়। এখন ফিস না নিয়ে সালিশের মাধ্যমে বেশিরভাগ বিবাদ মীমাংশার চেষ্টা করা হয়।উপজেলার ২ নং খানমরিচ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন খান মিঠু জানান, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাম আদালতের কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। এছাড়া ‘ইকো সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি এনজিও একজন ভিলেজ কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোভাইড করেছিল তাকেও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান থাকলে পারিবারিক সমস্যাগুলো সেখানেই মিটে যায়। ইদানিং অবশ্য থানায় নন-ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ বেশি আসায় সাধারণ ডায়েরি (জিডির) পরিমাণ বেড়ে গেছে।এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. নাজমুন নাহার সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, স্থানীয় কাউন্সিল আদালতগুলো অধস্তন আদালত হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে। এখানে আসল ঘটনার সত্যতা যাচাই করে শান্তিপূর্ণ সমাধান করাও সম্ভব। এজন্য গ্রাম আদালত গতিশীল করতে সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর