পঞ্চাশ বছর বয়স হানিফ আকনের। পেশায় ছিলেন একজন দিনমজুর। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদী গ্রামে তাঁর বেড়ে ওঠা। ১৮ বছর বয়সে হানিফের জীবনে শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। তবুও থেমে নেই তার জীবনযুদ্ধ। জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে সব বাধা পেছনে ফেলে বেছে নিয়েছিলেন হোটেলে বাবুর্চির কাজ। পরে বরিশালের একটি খাবার হোটেলে বাবুর্চির কাজ করতেন তিনি। খেয়ে দেয়ে ভালোই চলতো তার সংসার। হানিফ নিজের জন্য নয় অন্যের জন্যই হোটেলে রান্না করে যা আয় হতো তা দিয়েই চলতো সংসার। তবে এক সড়ক দুর্ঘটনা তার জীবনে এনে দেয় অন্ধকার জীবন। বছর চারেক আগে এক দূর্ঘটনায় তার শরীল থেকে চলে যায় একটি পা। তার পর থেকে হানিফে জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। সংসারে লেগে থাকে অভাব। পা হারিয়ে পাঁচ সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলতো তার সংসার। সুস্থ থাকাকালীন সময়ে হানিফের নিজের আয় থেকে কিছু জমানো টাকা ছিলো টাকা। তা দিয়েই হয়েছে তার চিকিৎসা। তবে চিকিৎসা শেষে হানিফ একটু সুস্থ হলেও পারছিলেন না হাটতে। মানুষের কাছ থেকে সহযোগীতা নিয়ে ও নিজের পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রি করে হানিফ নিজের চলাফেরা করার জন্য কৃত্রিম পা লাগায়। কৃত্রিম পা দিয়ে কোনভাবে চলাফেরা করতে পারলেও সংসার চালানোর মত ছিলো না কোন ব্যবস্থা। তাই সহযোগীতার জন্য বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ এর কাছে গেলে তিনি হানিফের জীবন যুদ্ধের ঘটনা শুনেন। পাশাপাশি হানিফ পা হারানোর আগে কি কাজ করতেন তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে হানিফ বলেন আমি জিলেপি বানাতে ভালো পারি। তাই তার ইচ্ছে রাস্তার পাশে ভ্যান গাড়িতে জিলাপি বিক্রি করার। পরে হাফিনের সংসার চালানোর জন্য তার ইচ্ছে পূরন করলেন মানবতার সেবক সাজ্জাদ পারভেজ সমাজসেবার সগকারী পরিচালক ও “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপের দায়িত্বে থাকা সাজ্জাদ পারভেজ। জিলাপি তৈরি করে বিক্রি করার জন্য সকল ধরনের সহযোগীতা করেন “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপের পক্ষ থেকে। নিজে দোকানে গিয়ে হানিফের জিলাপি তৈরির সকল উপকরন কিনে দেন। এর পর শুরু হয় হানিফের নতুন জীবনের নতুন পথ চলা। প্রতিদিন জিলেপি বিক্রি করেন। ক্রেতারও বেশ ভীড় করছে তার জিলাপি খেতে। হানিফ কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, একটি দূঘর্টনায় আমার একটি পা হারানোর পর অভাব শুরু হয় আমার সংসারে। তাই সাজ্জাদ পারভেজ ভাই’র কাছে সহযোগীতার জন্য গেলে তিনি তাদের “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপের পক্ষ থেকে আমাকে সকল ধরনের সহযোগী করেন। এবং আমার আয়ের উৎস হিসেবে জিলাপি তৈরি করে বিক্রির জন্য যে সমস্ত জিনিস পত্র দরকার তা তিনি কিনে দেন। হানিফ আরো বলেন, আমার কাছ থেকে তিনি নিজেও জিলেপি নিয়েছে কিনেছি। আমি তার কাছ থেকে টাকা নিতে রাজি না হলেও তিনি জিলাপির দাম দিয়ছেন। তার মত ভালো মানুষ এই দুনিয়ায় পাওয়া খুবই কষ্টকর। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপ যে আমার মত অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে পারে সব সময়। সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, এক দুর্ঘটনায় পা হারান হানিফ। ৭ জনের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন হানিফ। পঙ্গু হয়ে যাওয়ার ফলে পরিবারে নেমে আসে চরম দুর্দিন। একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে পরিবারের ভরণ পোষণের অর্থ যোগাতে চরম কষ্ঠের মধ্যে পড়তে হয় তাকে। তার দুর্দশার কথা শুনে “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগীতা করি। যদি সামনে তার আরো সহযোগীতা দরকার হয় তাও আমরা “ইভেন্ট ৮৪” গ্রুপ এর পক্ষ থেকে করবো। তিনি আরো বলেন, আমার ডায়াবেটিস থাকা সত্ত্বেও একটু জিলেপি খেলাম। বেশ সুস্বাদু ছিল। সবাইকে হানিফের দোকান থেকে জিলেপি কেনার আমন্ত্রণ রইলো। জিলেপি বিক্রি করে আবারও হানিফ ঘুরে দাঁড়াক- এটাই প্রত্যাশা তাদের।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন Read more

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার বিচার হবে: ড. ইউনূস
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার বিচার হবে: ড. ইউনূস

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. Read more

‘সবার কর্মফলের যোগফলই হবে মন্ত্রণালয়ের সুনাম’
‘সবার কর্মফলের যোগফলই হবে মন্ত্রণালয়ের সুনাম’

মন্ত্রণালয়ের সব দপ্তরের কর্মফলের যোগফলই হবে মন্ত্রণালয়ের সুনাম বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন