চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড)-এ চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে একের পর এক পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে শিল্প কারখানার অবকাঠামো। ফলে এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে পরিবেশগত বিপর্যয়ের শঙ্কা।পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ থাকলেও কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ নিয়ম তোয়াক্কা না করে বছরের পর বছর ধরে পাহাড় কেটে চলছে সমতলকরণ কাজ। এই অব্যবস্থাপনার ফলে সম্প্রতি ঘটেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। গত ১ মে সকালে পাহাড় ধসে ঘটনাস্থলে নিহত হয় দুই শিশু। আহত হয় আরও দুজন।এ ঘটনায় কেইপিজেডের বেপরোয়া পাহাড় কাটাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে এসব সংবাদে ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের ‘হলুদ সাংবাদিক’ বলে মন্তব্য করেন কেইপিজেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. মুশফিকুর রহমান।এক সাংবাদিক পাহাড় কাটার বিষয়ে বক্তব্য জানতে এজিএম মুশফিকুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “কেইপিজেড একটি আন্তর্জাতিক মানের শিল্প প্রতিষ্ঠান। এখানে আমি ৩০ বছর ধরে কাজ করছি। আনোয়ারায় ৪০ বছর আগেও কোনো পাহাড় ছিল না, সব ছিল টিলা। এই টিলা কেটে সমতল করা হচ্ছে। একদল সাংবাদিক অহেতুক বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করছে— এটা হলুদ সাংবাদিকতা।”সাংবাদিকদের সম্পর্কে এমন অবমাননাকর মন্তব্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন আনোয়ারা উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা। তাঁদের মতে, জনস্বার্থে প্রতিবেদন করাই সাংবাদিকদের দায়িত্ব। একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মকর্তা যদি সত্য প্রকাশের চেষ্টাকে ‘হলুদ সাংবাদিকতা’ বলেন, তবে তা শুধুমাত্র পেশাগত অসম্মানই নয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপরও হুমকি।পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও জানতে সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মুশফিকুর রহমানকে আবারও ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই ফোন কেটে দেন।এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের নাকের ডগায় পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করছে, অথচ এ নিয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তারা পাহাড় কাটা বন্ধ ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর