সাংবাদিক—শব্দটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে ব্যস্ত, ছুটে চলা আর খবরের পেছনে লেগে থাকা মানুষদের ছবি। সময়ের ঘোরে নিজের জীবন ভুলে থাকা এই পেশাজীবীরা কেবল সংবাদেই নয়, প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রেও নাকি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও রোমান্টিক!ভাবছেন, কাগজ-কলম আর মাইক্রোফোন হাতে থাকা মানুষ প্রেমিক হিসেবে কতটা ভালো হতে পারে? অবাক করার মতো হলেও সত্যি—একাধিক সমীক্ষা বলছে, ভালোবাসার মানুষ হিসেবে সাংবাদিকদের চেয়ে ভালো সঙ্গী পাওয়া মুশকিল!কেন? চলুন জেনে নিই তাদের প্রেমিক হওয়ার পেছনের দারুণ সব ইতিবাচক দিকগুলো।শহরের সেরা জায়গাগুলোর ‘গাইড’অনেকের ধারণা সাংবাদিকরা নিস্তেজ, অসামাজিক এবং আত্মপ্রেমেই মগ্ন থাকেন। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। সংবাদ সংগ্রহণের জন্য তারা দেশে আনাচকানাচে ঘুরে বেড়ান। তারা শহরের সেরা জায়গাগুলো চিনে। প্রেমিক হিসেবে সে আপনাকে সেই জায়গাগুলোতে নিয়ে যেতে পারেন। এমন মানুষের সঙ্গী হতে কে না চাইবে?সৃজনশীলসাংবাদিক মানে সৃজনশীল। তাদের গল্প বলার ধরন যেমন আকর্ষণীয় কথা বলাও ধরনও তাই। একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করার অন্যতম সুবিধা হলো, তিনি আপনাকে সব সময় স্নিগ্ধ উপায়ে মুগ্ধ করবে। এমনকী তার দেওয়া কষ্ট কিংবা অবহেলাও হবে একইরকম সৃজনশীল।অন্তহীন কথোপকথনসাংবাদিকরা দেশের বাইরেও বিশ্বের চারপাশে যা ঘটছে তার খোঁজ রাখেন। সুতরাং তাদের সঙ্গে কথোপকথন হয়ে থাকে আকর্ষণীয়। কথা চালিয়ে গেলে তা আপনার জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করবে একই সঙ্গে আপনিও বিরক্ত হবেন না। কারণ তারা যে কোনো বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে।বিশ্বস্তসাংবাদিকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বিশ্বস্ততা। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেকর্ডের বাইরে রাখা থেকে শুরু করে তারা অনেক কিছুই নিরাপদ ও গোপন রাখতে জানে। আপনি যদি একজন সাংবাদিকের সঙ্গে প্রেম করেন তবে আপনার বিশ্বাস ভঙ্গ হবে না এবং আপনার গোপনীয়তা সব সময় নিরাপদ থাকবে।তারা কখনো হাল ছাড়ে নাএকটা সত্য খবর পেতে সাংবাদিক যেমন ছুটে বেড়ায় শেষ পর্যন্ত, তেমনি সম্পর্ক নিয়েও তারা সিরিয়াস। সমস্যা হলেই ‘ব্রেকআপ’ বলে পালিয়ে যাওয়ার লোক না তারা। বরং সবকিছু যাচাই করে, আপনার দিকটাও বোঝে, তারপর সমাধানের চেষ্টা করে।মাল্টিটাস্কারঅগণিত উৎস, সময়সীমা এবং ভীষণ চাপের পরিবেশে কাজ করা তাদের অন্যতম দক্ষতা। সাংবাদিকরা মাল্টিটাস্কিংয়ে বিশেষজ্ঞ। তারা তাদের কাজ এবং তাদের সম্পর্কের মধ্যে পুরোপুরি ভারসাম্য রাখতে জানে। তারা সারাদিনের পরিশ্রমের পরেও সঙ্গীকে ভালোবাসা এবং যত্ন করতে পারে।আপনাকে স্পেস দেবেসাংবাদিকদের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। তারা আপনাকে এক মিলিয়ন প্রশ্ন দিয়ে অতিষ্ঠ করবে না বা আপনি কীভাবে আপনার দিনের প্রতিটি মিনিট কাটিয়েছেন তা জানার দাবি করবে না। তারা আপনাকে স্পেস দেবে এবং বিনিময়ে একই আশা করবে।কঠোর পরিশ্রমীসাংবাদিক হওয়া সহজ নয়। এ পেশায় প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং নিঃশর্ত অধ্যবসায়। পিআর- এর সঙ্গে কাজ করা থেকে শুরু করে খবরের উৎসের পেছনে দৌঁড়ানো, কোনোটিই সহজ নয়। তারা ঠিক জানে- কোনোকিছু সঠিকভাবে পেতে এবং কার্যকর করতে কী লাগে এবং তাদের ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও একই আচরণ আশা করে।ভালো শ্রোতাসাংবাদিকদের অন্যতম আরেকটি গুণ হলো তারা ভালো শ্রোতা। তারা দুর্দান্ত গল্প বলার পাশাপাশি গল্প শোনতেও জানে। তারা আপনার করা সামান্য ইঙ্গিতও ধরে ফেলার পারদর্শীতা রাখেন। সহায়ক সাংবাদিকরা প্রয়োজনে অন্যকে সাহায্য করার জন্য নিজের সামর্থ্যের বাইরেও যায়। এক্ষেত্রে পরিচিত কেউ হলে তো কোনো কথাই নেই। তিনি তার সবটা দিয়ে চেষ্টা করবে আপনাকে সাহায্য করার।পরিশেষে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে সাংবাদিক মানে—নির্ভরতা, কেয়ারিং মন, খোলা হৃদয় আর সংবেদনশীল সাহচর্য।এসকে/আরআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর