যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর প্রতীক তারামন বিবি হলের দুই আবাসিক শিক্ষার্থী তাদের কক্ষে গাছ লাগানোর জন্য হলের সামনের দিক থেকে মাটি নিতে গিয়েছিলেন। তবে তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত না জানিয়ে উল্টো তাদের ‘চোর’ বলে তিরস্কার করার অভিযোগ উঠেছে হলের দুজন সহকারী প্রভোস্টের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে কোনো ‘চুরি’ হলে তাদের দায়ী করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন জানান, তারা হলের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য কিছু গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে তারা সামান্য মাটি নিতে হলের সামনের দিকে যান। এ সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্য বিষয়টি জানতে চাইলে তারা হলের প্রভোস্টের অনুমতি নেওয়ার কথা বলেন।শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট অফিসে অনুমতির জন্য গেলে সেখানে উপস্থিত সহকারী প্রভোস্ট কোনো কথা না শুনে তাদের ‘চোর’ বলে অভিহিত করেন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে হলের কোনো জিনিস চুরি হলে তাদের ধরা হবে বলে নাম ও রুম নম্বর খাতায় লিখে রাখেন।এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং প্রশ্ন তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন আইনে শিক্ষার্থীদের সামান্য মাটি নেওয়ার জন্য ‘চোর’ বলা যায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য শিক্ষার্থীদের যেকোনো উদ্যোগকে উৎসাহিত করা উচিত। সেখানে সামান্য গাছ লাগানোর জন্য তাদের সঙ্গে এমন অপমানজনক আচরণ অপ্রত্যাশিত। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত সহকারী প্রভোস্টের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।এ বিষয়ে প্রভোস্ট আফরোজা খাতুনের সাথে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি তিনি ফোন ধরেননি। তবে অভিযুক্ত সহকারী প্রভোস্ট ফারজানা ইয়াসমিন নিপা জানান, ” বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আমরা গাছ লাগাই সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা গাছ উঠিয়ে নিয়ে যেয়ে নিজের রুমে লাগাই। দুজন শিক্ষার্থী মাটি নিতে আসলে আমি তাদেরকে বলি আমরা কষ্ট করে টাকা দিয়ে মাটি কিনে নিয়ে আসছি আর তোমরা এই মাটি কেন নিচ্ছ? আমি শিক্ষার্থীদের চিনিনা সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য চুরি হওয়ায় তাদের উপর রাগ করে কিছু কথা বলছিলাম। ” শিক্ষার্থীদের চোর বলার বিষয়টা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন কল দিয়ে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন বন্ধ করার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। তারা আশা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই ঘটনার নিষ্পত্তি করবে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর