পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে রাতের আঁধারে একাধিক স্থানে আওয়ামী লীগের লিফলেট ফেলে গেছে। কে বা কারা এইসব লিফলেট ফেলে গেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শুক্রবার(২ মে) সকালে পৌরশহরের পরিমল দে মার্কেটে সামনে, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, বিজয় চত্বরে এই সব লিফলেট রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।এইসব লিফলেটে ‘শেখা হাসিনাতেই আস্থা’ ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘আগেই ভালো ছিলাম’ লেখা রয়েছে। এইদিকে লিফলেট দেখে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সম্প্রতি দেবীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীদের এলাকায় দেখা গেছে। যারা ১০ মাস আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মারমুখী অবস্থানে ছিল।একই সাথে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কারা জড়িত এবং দেশীয় অস্ত্র হাতে অবস্থান নিয়েছিল তা শনাক্তকরণে ছবি ও ভিডিও দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলছে পুলিশ ও আদালত। অথচ পুলিশের কাছে এই সংক্রান্ত কোন ছবি বা ভিডিও নেই বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সে সময় পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত ছিল সাধারণ মানুষও ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে পারেনি।পুলিশের নমনীয় অবস্থানের কারণে যে কোন মুহূর্তে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। এর আগে ৩১ জানুয়ারী উপজেলা পরিষদ চত্বরের দেওয়ালে, মিনি স্টেডিয়াম ও নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে ‘জয় বাংলা’ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। সে সময় পুলিশ নাশকতা ঠেকাতে কিছু গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে। যদিও ইউনিয়ন পর্যায়ের কিছু নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করলেও পৌরশহরে তেমন কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। দেওয়াল লিখনে জড়িতদেরও শণাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এখন প্রকাশ্যেই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে একাধিক চিহ্নিত নেতা-কর্মী। অথচ জুলাই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে পুলিশকে দিয়েই ছাত্র-জনতার উপর দমন-পীড়ন চালানো হতো। পুলিশের এমন স্বজনপ্রীতির কারণ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে স্থানীয়রা।লিফলেট ফেলে যাওয়ার ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি-জামায়াত ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, এভাবে পুলিশের উদাসীনতায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সূত্রের দাবি, ৪ আগস্ট যে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেশীয় অস্ত্র মজুদ করে হামলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল সেগুলোর ব্যাপারে পুলিশকে অবহিত করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে জুলাই অভ্যুত্থানের রক্তের দাগ না মুছতেই এলাকায় প্রকাশ্যে দেখা গেছে একাধিক নেতা-কর্মীদের। যারা ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালাতে সে সময় সক্রিয় ছিল।দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, গতকাল রাতে একটি মোটরসাইকেলে করে এসব লিফলেট ছড়ানো হয়। পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় পেট্রোলিং এ ছিল। আমরা খবর পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই । তবে তারা পালিয়ে যায়। তাদের সনাক্ত করতে কাজ চলমান রয়েছে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর