মালদ্বীপ থেকে জসিম উদ্দিনের (৪৫) লাশ অ্যাম্বুলেন্স যোগে বাড়িতে আসে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে। রাতভর লাশের পাশে বসে ছিল ছেলে মেহনাব।বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জানাযা নামাজ পড়ে লাশ দাফন শেষে পরীক্ষা দিতে হলে গিয়েছেন ছেলে। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে।উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে জসিম উদ্দিন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সেজ। জসিমের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে মো. মেহনাব হোসেন পূর্ব খাজুরবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষা কেন্দ্র কালাইয়া কামিল মাদ্রাসা। আজ তার কৃষি পরীক্ষা। মেয়ে জারিন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।জসিমের ছোট ভাই মো. মাহফুজ বলেন, দেশে বিভিন্ন ব্যবসা করে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় সাত বছর আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন মো. জসিম উদ্দিন (৪৫)। স্বপ্ন ছিল কাজ করে ঋণের টাকা পরিশোধ করবেন, সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সচ্ছলতা। হাসি ফোটাবেন স্ত্রী-সন্তানদের মুখে। স্বপ্নপূরণের ধারপ্রান্তেও এসেছিলেন। কথা ছিল আসছে ঈদুল আজহার আগে বাড়ি ফিরবেন। পরিবারপরিজনের সঙ্গে ঈদ করবেন। বাড়িতে ফিরছেন ঠিকই। তবে জীবিত নয়, ফিরছেন লাশ হয়ে।বাংলাদেশ সময় গত শনিবার দিবাগত রাত চারটার দিকে মালদ্বীপের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জসিম। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। জসিমের মৃত্যুর খবরে তার পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।স্ত্রী মাসুমা আক্তার অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মেয়ে জেরিনের বুঝ হওয়ার আগেই ওর বাবা বিদেশে চলে যান। বুঝ হওয়ার পর থেকে বাবাকে কখনো সামনাসামনি দেখা হয়নি। ভিডিও কলে বাবাকে দেখতো। এবার ঈদে (ঈদুল আজহা) ওর বাবা আসবে। আদর করবে সেই স্বপ্নে বিভোর ছিলো মেয়েটি। ওর বাবা এসছে তবে জীবিত না। দেখেছে বাবার নিথর দেহটাকে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর