৫ আগস্ট শহীদ হওয়া শাহাদাতের লালন-পালন নিয়ে মা-নানীর দোটানায় বিপাকে পড়েছেন প্রশাসন। দেশে জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া পরিবারদের সরকারি -বেসরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় শহীদ শাহাদাতের পরিবার নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।শহীদ শাহাদাত হোসেন গেলো ৫ আগস্ট ফরিদগঞ্জ থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে তার মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তার মা ও নানী হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিথুবা গ্রামের নানার বাড়ীর কবরস্থানে দাফন করা হয়।তার মা শিরোতাজ বেগম বলেন, ৫ আগস্ট দুপুরে বাসা থেকে খাওয়া-দাওয়া করে বের হয় শাহাদাত। পরে তাকে ফোন দিলে সে ফরিদগঞ্জ বাজারে আছে বলে জানায়। বিকালে খবর পাই, আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে। আমরা তখন ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার কলাবাগানের পাশে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ছিলাম। শাহাদাত আমার কাছে থেকেই ফরিদগঞ্জ বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে চাকুরী করছিল।তিনি আরো জানান, সরকারী-বেসরকারী ভাবে যখন আর্থিক সহযোগিতা শুরু করা হয়। তখন হঠাৎ জানতে পারি আমার মা মমতাজ বেগম শাহাতাদের অভিভাক দাবী করেছেন। তিনি কিছু কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় আমার মা আর্থিক লোভে বিভিন্ন কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে জমা দেন। বিষয়টি জানতে পেরে আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যায়নপত্র সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কাজ পত্র জমা দিয়েছি। ’শাহাদাত ও তার মা যেই এলাকায় বাসা ভাড়া ছিল।সেই এলাকার বাসিন্দা ইমাম হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম জানান ,শাহাদাত তার মায়ের সাথে থাকতেন। সেখানে শাহাদাত ও তার মায়ের পরবর্তী স্বামীসহ বসবাস করতেন। ছেলেটা ৫ আগস্টে থানার সামনে একটি মিছিলে ছিল। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাপড়ের দোকানে চাকরী নেয়ার আগে শাহাদাত চাঁদপুর শহরের দারুণ নুর হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো। মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, কয়েক বছর আগে তার মা এখানে ভর্তি করিয়ে দেয়। প্রায় তিন বছর আমার প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে শাহাদাত।শাহাদাতের নানী মমতাজ বেগম বলেন, ছোট বেলা থেকে শাহাদাতকে আমি বেশিরভাগ সময় লালন-পালন করেছি। শিরোতাজ তখন অন্য জায়গায় কাজ করতো। ইউপি চেয়ারম্যান জানান, এ বিষয়ে আমি প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি তার মা শিরোতাজ বেগম নিহত শাহাদাত হোসেনের প্রকৃত অভিবাবক।ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, শহীদ শাহাদাতের অভিভাবকের দাবিদার দুই পক্ষ। বিষয়টি জটিল হওয়ায় আমরা দুই পক্ষের সকল কাগজপত্র জুলাই বিপ্লব ফাউন্ডেশনের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। তারা সেখান থেকে যেই সিদ্ধান্ত দিবে সেভাবে তাদেরকে বন্টন করা হবে। এখন আমরা কোন বরাদ্দ এলে দুই ভাগে ভাগ করেই সহযোগিতা করে আসছি।এদিকে জুলাই আন্দোলনে শহীদদের তালিকায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে শাহাদাতের মা শিরোতাজই অভিভাবক হিসেবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর