গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত জানুয়ারিতে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং তিনটি মধ্যস্থতাকারী দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, এবং মিসরের ব্যাপক প্রচেষ্টায় ছিল। এই চুক্তি অনুসারে গাজার যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল ১৯ জানুয়ারি। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা সামারিক অভিযানের ইতি টেনেছিল ইসরায়েল। ভয়াবহ সেই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে যে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল হামাসের যোদ্ধারা, সেই হামলার জবাব দিতে এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের উদ্ধারে এ অভিযান শুরু করেছিল ইসরায়েল।যে চুক্তির ভিত্তিতে ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল, সেটি তিন পর্বে বিভক্ত। প্রথম স্তরে হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মি ও ইসরায়েলের কারাগারগুলোতে থাকা বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি গাজায় খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ স্বাভাবিক করার শর্ত ছিল। দ্বিতীয় স্তরের শর্ত ছিল যে অবশিষ্ট সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস এবং গাজা থেকে নিজেদের সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেবে ইসরায়েল।চুক্তির প্রথম পর্বের মেয়াদ ছিল ৬ সপ্তাহ। সেই মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে; তারপর থেকে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে সমস্যায় পড়েছে ইসরায়েল ও হামাস। কারণ হামাস চাইছে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, অন্যদিকে ইসরায়েলের আশঙ্কা— গাজা থেকে সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে নিজেদের সংগঠিত করে ফের ইসরায়েলে হামলা চালাবে হামাস।এর মধ্যে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দ্বৈত নাগরিক এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সেনা সদস্য ইদান আলেক্সান্দারসহ চার জন দ্বৈত নাগরিকের মরদেহ ইসরায়েলকে ফেরত দেয় হামাস। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে ইদান আলেক্সান্দার ও বাকি ৩ জনকে ইচ্ছাকৃতভাবে খুন করেছে হামাস যোদ্ধারা, তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।এই নিয়ে দু’পক্ষের টানাপোড়েনের মধ্যেই গত সোমবার রাতে গাজায় ফের সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ অভিযানে ইতোমধ্যে নিহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ শ’ ফিলিস্তিনি।ফলে ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল, গতকাল সোমবার কার্যত তা শেষ হয়ে গেছে।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর