সমালোচনা উপেক্ষা করে টাকা ছাপিয়ে আবারও ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে আরও আড়াই হাজার কোটি টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে ১ হাজার ৫০০ কোটি ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ১ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে এ নিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ২৯ হাজার ৪১০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হলো। এর মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পেয়েছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংককে দেওয়া হয় ৫ হাজার কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংককে ২ হাজার কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে ১০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ২ হাজার কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংককে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ও এবি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়।শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ব্যাংক খাতের ক্ষত লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের শেষদিকে বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির খবর সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। তখন ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা অর্থ তুলে নিতে শুরু করেন। এতে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলো বিধিবদ্ধ নগদ তারল্য সংরক্ষণ হিসেবে সিআরআর এবং সরকারি সিকিউরিটিজ হিসেবে এসএলআর রাখতেও ব্যর্থ হয়। এরপরও ব্যাংকগুলোকে নানা অবৈধ সুবিধা দিয়ে টিকিয়ে রাখেন তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এর মধ্যে অন্যতম ছিল চলতি হিসাবে ঘাটতি ও টাকা ছাপিয়ে তারল্য দেওয়া।যদিও বর্তমান গভর্নর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দিয়ে জানিয়েছিলেন, কোনো ব্যাংকে টাকা ছাপিয়ে ধার দেওয়া হবে না। তবে সেই কথা তিনি ধরে রাখতে পারেননি। ব্যাংকগুলোর সংকট গভীর হলে গত নভেম্বর ছয়টি ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। পরে জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৯১০ কোটি টাকা এবং গতকাল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়। এসব ব্যাংককে টাকা ধার দেওয়া হয়েছে জামানত ছাড়াই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে সরাসরি টাকা দিলে মূল্যস্ফীতি উসকে যেতে পারে।গত নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমরা টাকা ছাপাব না। আগের সে অবস্থান থেকে আমি সাময়িকভাবে সরে এসেছি, পুরোপুরিভাবে নয়। আমরা সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে যে পরিমাণ তারল্যের জোগান দেব, বাজার থেকে সমপরিমাণ টাকা বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে তুলে ফেলব। ‘এক হাতে টাকা দেব, অন্য হাতে বাজার থেকে তুলে নেব। এ কারণে প্রক্রিয়াটিকে পুরোপুরি টাকা ছাপানো বলা যাবে না। বাজারে তারল্যের স্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।’বাজার থেকে টাকা তুলে নেয়ার জন্য ৯০ ও ১৮০ দিন মেয়াদি বাংলাদেশ ব্যাংক বিল প্রবর্তনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। গভর্নর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকবে। এক ব্যাংকের টাকা অন্য ব্যাংকে গেলে সেখান থেকে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে তুলে ফেলব, যাতে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির ভারসাম্য ঠিক থাকে, তারল্য পরিস্থিতি ঠিক থাকে। ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের যে প্রচেষ্টা, সেটি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি না। নতুন এ প্রক্রিয়ার কারণে গ্রাহকদের কোনো অসুবিধা হবে না। আবার বাজারকেও অস্থিতিশীল হতে দেব না।’তবে গভর্নরের সেই কথার সঙ্গে বাস্তবে মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ দুই মাসে ১০টি নিলামে বাজার থেকে উত্তোলন হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
নরসিংদীতে ৩ সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
নরসিংদীতে ৩ সন্তানের জননীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

নরসিংদীর রায়পুরায় আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের রহিমাবাদ গ্রামে ৩ সন্তানের জননী হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক গৃহবধুকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ এবং কাউকে Read more

ভাঙ্গুড়ায় গাঁজা-ইয়াবাসহ বিএনপি নেতার ছেলে গ্রেফতার
ভাঙ্গুড়ায় গাঁজা-ইয়াবাসহ বিএনপি নেতার ছেলে গ্রেফতার

 পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গাঁজা ও ইয়াবা বড়ি সহ  আটক বিএনপি নেতার ছেলে তানভীর আহমেদ শিমুলকে (২৬)  কারাগারে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১ Read more

১৪ ও ১৫ আগস্ট সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক যুবদলের
১৪ ও ১৫ আগস্ট সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক যুবদলের

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে সারাদেশে দুদিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন