ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতিরিক্ত ভিটামিন ডি সেবন করলে শরীরে কিছু নীরব বা সহজে বোঝা না যাওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই প্রভাবগুলো শুরুতে খুব একটা চোখে পড়ে না, তবে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। নিচে এমন ৬টি নীরব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সেগুলোর প্রতিকার উল্লেখ করা হলো:১. রক্তে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম (হাইপারক্যালসেমিয়া)অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। এতে ক্লান্তি, বমিভাব, ঘনঘন প্রস্রাব, এমনকি বিভ্রান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তবে অনেক সময় এগুলো বোঝা যায় না।প্রতিকার: দৈনিক নির্ধারিত মাত্রায় (প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত ৬০০–৮০০ আইইউ) সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। নিয়মিত রক্তে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি’র মাত্রা পরীক্ষা করান।২. কিডনিতে চাপ বা কিডনি স্টোনভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ায়, ফলে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম কিডনিতে জমে পাথর তৈরি করতে পারে। এটি ধীরে ধীরে হওয়ায় অনেক সময় ধরা পড়ে না।প্রতিকার: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম একসঙ্গে উচ্চ মাত্রায় গ্রহণ করবেন না।৩. হজমজনিত সমস্যাঅনেকে ভিটামিন ডি খাওয়ার পর কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস বা পেট ব্যথার মতো সমস্যা অনুভব করেন, যা অন্য কারণে হয়েছে ভেবে অবহেলা করা হয়।প্রতিকার: খাবারের সঙ্গে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। সমস্যা স্থায়ী হলে ডোজ কমান বা অন্য ব্র্যান্ড ব্যবহার করে দেখুন।৪. মেজাজ পরিবর্তন বা রাগাভাবভিটামিন ডি মস্তিষ্কে স্নায়ুর কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত গ্রহণে কিছু ক্ষেত্রে উদ্বেগ, রাগ, বা হতাশার মতো মানসিক পরিবর্তন হতে পারে।প্রতিকার: নতুন সাপ্লিমেন্ট শুরু করলে মনের অবস্থা নজর রাখুন। সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।৫. হাড়ের ব্যথা বা দুর্বলতাবেশি ভিটামিন ডি দীর্ঘমেয়াদে হাড় থেকে ক্যালসিয়াম বের করে রক্তে মিশিয়ে দেয়, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়।প্রতিকার: ভিটামিন ডি’র পাশাপাশি পর্যাপ্ত ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন কে২ গ্রহণ করুন, যাতে ক্যালসিয়াম হাড়েই থেকে যায়।৬. ওষুধের সঙ্গে প্রভাবভিটামিন ডি কিছু ওষুধের সঙ্গে নীরবে প্রতিক্রিয়া করতে পারে, যেমন স্টেরয়েড, ডাইইউরেটিক বা হার্টের ওষুধ। এতে ওষুধের কার্যকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বদলে যেতে পারে।প্রতিকার: যেকোনো সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে ডাক্তারকে জানান। তিনি উপযুক্ত ডোজ ঠিক করে দিতে পারবেন।ভিটামিন ডি স্বাস্থ্যকর, তবে মাত্রার অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। সঠিক পরিমাণে, সচেতনভাবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে এই উপকারী উপাদানটির সুফল ভোগ করা সম্ভব, সেই সঙ্গে নীরব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো থেকেও নিজেকে রক্ষা করা যায়।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর