কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অন্তর আহমেদ জয়ী (২৬) নামের এক অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ। শনিবার(১৯ এপ্রিল) রাতে পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ওই অপহরণকারী অন্তর আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার রিপন মিয়ার ছেলে।গ্রেপ্তারের পর অন্তর আহমেদের দেয়া তথ্য মতে অভিযানে চণ্ডিবের আইভি চত্বর এলাকায় রায়হানের বাসা থেকে অপহরণকৃত মো. রুবেল (২৭) নামে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর থানার মনোকরসা এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় অপহরণকারী অন্তর আহমেদসহ আরো ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২/৩ কে আসামি করে থানায় একটি অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলা করেছে অপহরণকৃত ব্যক্তির মামা শ্বশুর মো. মোস্তফা মিয়া।এ ঘটনায় অন্যান্য আসামীরা হলেন, পৌর শহরের চণ্ডিবের আইভি চত্বর এলাকার সুবহান মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম (৩০), একই এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে ইলিয়াস কসাই (৩০), বেদের হাঁটি এলাকার হযরত আলীর ছেলে রায়হান মিয়া (৩২)। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব।থানা পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ১ বছর যাবত ব্যবসার কাজের জন্য কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা যাতায়াত করে রুবেল মিয়া। যাত্রাপথে রুবেল এর সাথে পরিচয় ভৈরবের নুরুল ইসলামের। ১৮ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ জেলায় পরিবার নিয়ে মো. রুবেল এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওইদিন বিকালে সেখান থেকে ফেরার পথে ভৈরব হয়ে বাড়ি যাওয়ার বিষয়টি জেনে যায় নুরুল ইসলাম। এসময় নুরুল ইসলাম রুবেল মিয়াকে ভৈরবে তাদের সাথে দেখা করে যেতে বলেন। বিকাল ৫টায় রুবেল তার পরিবার নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করে নুরুল ইসলামের সাথে দেখা করতে। পরে নুরুল ইসলাম তার সহযোগীদের নিয়ে রুবেলকে সুকৌশলে অন্তর আহমেদ জয়ী এর মোটরসাইকেল করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। হঠাৎ ৬টা ৩০ মিনিটে অপহরণকারী চক্রসহ নুরুল ইসলাম রুবেল মিয়ার স্ত্রী আঁখি বেগমকে তার মুঠো ফোনে ফোন করে নগদ ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়ে তার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে বলেন। এঘটনার বিষয়টি রুবেল এর পরিবার অবগত হয়ে পরক্ষণে ভৈরব থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়। পরে অপহরণকৃত রুবেলের মামা শ্বশুর মো. মোস্তফা মিয়ার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানীসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে অন্তর আহমেদ জয়ীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে চণ্ডিবের এলাকার তাদের সহযোগী রায়হানের বাসা থেকে রুবেলকে রাতে উদ্ধার করা হয়।এ বিষয়ে অভিযোগকারী মোস্তফা মিয়া বলেন, যাত্রা পথে মানুষের সাথে মানুষের ভাল সম্পর্ক হতেই পারে। কিন্তু আমার ভাগ্নীর স্বামীর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও নুরুল ইসলাম রুবেলকে অপহরণ করেছে। নুরুল ইসলাম নগদ ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেলে রুবেলকে হত্যার হুমকিও দেয়। আমরা অপহরণকারী কঠিন বিচার চাই।এ বিষয়ে ভৈরব থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তালেব বলেন, ভৈরবে নুরুল ইসলামের একটি অপহরণকারী চক্র রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মাদক মামলা রয়েছে। অপহরণের বিষয়টি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্তর আহমেদ স্বীকার করেছে। তার সহযোগীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপহরণকারীকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর