রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারি এলাকায় মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আকরাম হোসেন (৫২) নামের এক বাসচালককে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে র্যাব-৫ এর অভিযানে নওগাঁ সদর থেকে মামলার প্রধান দুই আসামী নান্টু ও খোকন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় র্যাব ৫ এর সদর দপ্তরে অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতারের বিষয় নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টায় নওগাঁ সদর থানার রামরায়পুর আড়ারাপাড়া এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত এই দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ পিএসসি-এর নির্দেশনায় এই গ্রেফতার অভিযান পরিচালিত হয়।জানা গেছে, নিহত আকরাম হোসেন তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন বাস ড্রাইভার ছিলেন। তিনি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন এলাকায় বসবাস করতেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত আকরাম হোসেনের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল প্রতিবেশী নান্টু ও তার সহযোগীরা। গত ১৬ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টায় মেয়েটি প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার সময় নান্টু ও তার দল তাকে অটোরিকশা থেকে নামার পর গালিগালাজ ও হেনস্তা করে। মেয়েটি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে তার বাবাকে জানান। এরপর আকরাম হোসেন প্রতিবাদস্বরূপ নান্টুর বাবার কাছে বিষয়টি অবগত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নান্টু এবং তার সহযোগীরা রাত ১০টার দিকে আকরামের ছেলে ইমাম হোসেনকে রাস্তায় একা পেয়ে হামলা চালায়। ইমাম চিৎকার করলে তার বাবা আকরাম হোসেন ছুটে আসেন এবং তাকেও এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পরদিন এলাকাবাসী রাজশাহীর তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকায় লাশ নিয়ে মানববন্ধন করেন এবং দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। ঘটনার পরদিন নিহতের ছেলে মো. ইমাম হোসেন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৩-৪ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত দুই আসামি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না। অপরাধী যেখানেই থাকুক, র্যাব তাদের খুঁজে বের করবে এবং আইনের আওতায় আনবে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর