রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে শাখা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ খেয়া নৌকায় পারাপারে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন হাজার-হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে একটি সেতুর অভাবে উজানচর ইউনিয়নের ৫টি ওয়ার্ডের প্রায় ৩০হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দরফেরডাঙ্গা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। তাদের নিয়মিত খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। আর এই খেয়া নৌকায় পারাপার হতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হন স্থানীয়রা। এ সময় স্থানীয়রা দাবি করেন, ৫টি ওয়ার্ডের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের পারাপারের ভরসা একটিমাত্র খেয়া নৌকা।স্থানীয় খেয়া নৌকার মাঝি আলম শেখ বলেন, ভোর ৬টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত মানুষকে পারাপার করতে হয়। ঢাকা থেকে প্রায় অনেক রাতে লোকজন আসে। নৌকাতে ঝুঁকি নিয়েই বৃদ্ধ, বয়স্ক, শিক্ষার্থীসহ সবাই পারাপার হয়। প্রায় সময় কস্তুরীতে আটকে যায় এই নদী পথ অনেক কষ্টে আবার এই কস্তুরী সরাতে হয়। আমিও চাই এখানে একটি ব্রিজ হোক।ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রিশাদ বলেন, আমার স্কুলে যেতে হয় খেয়া নৌকা দিয়ে। প্রতিদিন আমি চারবার যাতায়াত করি এই নৌকায়। নৌকায় স্কুলে যাইতে অনেক কষ্ট হয়। যেদিন কস্তুরীতে নৌকা আটকে যায় সেদিন স্কুলে যেতে পারি না। একটা ব্রিজ হলে অনেক ভালো হয়।পূর্ব উজানচর দরফেরডাঙ্গা এলাকার আলাউদ্দিন শেখ বলেন, ‘এই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। আমরা এখান দিয়ে একটি রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে পারি না। রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে আমাদেরকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে তারপরে হাসপাতালে নিতে হয়। আমরা কৃষি কোন পণ্য এই নৌকা দিয়ে সহজে হাটবাজারে নিয়ে যেতে পারি না। এখানে একটি সেতু হলে আমাদের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়।উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, দরফেরডাঙ্গা এলাকার ওইখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে কয়েকটি এলাকার মানুষ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে। এই ব্রিজের জন্য কৃষকের উৎপাদিত ফসল সহজেই হাটবাজারে নিয়ে যেতে পারেনা এবং ফরিদপুর হাসপাতালে রোগীকে সহজেই নিতে পারে না। ওই খানে একটি ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নীল বলেন, ‘ঢাকা হেড অফিসে এই ব্রিজটি নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠাবো।’ ইতিপূর্বে বিভিন্নবার আসলে প্রস্তাবনা গেলেও হয়তোবা কিছু জটিলতার কারণে ব্রিজটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এইবার আমরা গোয়ালন্দ এলজিইডির পক্ষ থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা করব এবং সকল ধরনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা যাতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে ব্রিজটি নির্মাণ করতে পারি, সেজন্য গোয়ালন্দ এলজিইডি পরিবার আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান জানান, এটি আমাদের এলজিডি ডিপার্টমেন্ট সংশ্লিষ্ট একটি কাজ। এটি আমরা যাচাই করে প্রস্তাব পাঠানোর ব্যবস্থা নিব। ওইখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে যদি এলাকাবাসীর উপকার হয় আমরা দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর