দীর্ঘদিন যাবত চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের জিরানি বাজার এলাকায় ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউজে রুম ভাড়ার পাশাপাশি নারী যৌনকর্মী দিয়ে দেহব্যবসা করছেন কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল পরিবর্তন করে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের ম্যানেজ করেই চলছে এই ব্যবসা। দেহব্যবসার বিষয়টি ইতিপূর্বে কখনোই স্বীকার করেননি কর্তৃপক্ষ। তবে এবার ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউজের ম্যানেজার আশরাফ আলী দেহব্যবসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউজের মালিক ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা গাজী মনির বলেন, আমার কারো সাথে সম্পর্ক খারাপ না, আমি আজকে থেকে হোটেল ব্যবসা করিনা। আমি কোনাবাড়িতে অতিথি চালিয়েছি, চান্দরা নিউ অতিথি, চাঁদপুর বডিং আমার ছিলো। ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউস আমারই, কোন সাংবাদিক আমার কাছ থেকে টাকা ছাড়া ফিরে গেছে এমন লোক কমই আছে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠান থেকে গত মাসে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা বিভিন্ন জনকে দেওয়া হয়েছে। বিল্ডিংয়ের ভাড়া ছাড়াই আর এর জন্যই নিজেই বসে থেকে দেখাশোনা করি।গত বুধবার (০৯ এপ্রিল) সারাদিনব্যাপী ও রাত দশটা পর্যন্ত ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউসে ২৯ জোড়া যুবক-যুবতী ও কিশোর কিশোরীসহ নারীর যৌনকর্মীরা প্রবেশ করে। তাদের সবাইকে রুমভাড়া দেয় গেস্ট হাউসটির মালিক গাজী মনির ও ম্যানেজার আশরাফ আলী।এছাড়াও শুধুমাত্র রুম ভাড়া দেওয়া হলে নেওয়া হয় ১ হাজার ২০০ টাকা। পাশাপাশি রুমের সাথে যদি নারী যৌনকর্মী দেওয়া হয় তাহলে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে জানান ড্রিমলান্ড গেস্ট হাউজের ম্যানেজার আশরাফ আলী। আর এভাবেই রুমভাড়ার মাধ্যমে এলাকার এবং বহিরাগত যুবক-যুবতী ও কিশোর-কিশোরীদের অবৈধ মেলামেশায় সহায়তা করছে ড্রিমল্যান্ড গেস্ট হাউজটির কর্তৃপক্ষ।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুরের ১নং ওয়ার্ডের জিরানি বাজার এলাকায় ড্রিমল্যান্ড আবাসিক হোটেলে, রুম ভাড়ার পাশাপাশি নারী যৌনকর্মী দিয়ে গোপনে অসামাজিক কার্যকলাপ জনিত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এছাড়াও গেস্ট হাউসে নারী দিয়ে দেহ ব্যবসায়ীরা রুম ভাড়া ও নারী যৌনকর্মীদের ভাড়ার মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন মালিক পক্ষ ক্ষমতার বীর দাপটেই।জিরানি বাজার এলাকার আব্দুর রহিম মিয়া জানান, কি বলবো ভাই, হোটেলটা চালু হওয়ার পর থেকে এলাকার উঠতি বয়সের পোলাপানগুলো ওখানে যাওয়া আসা করে। আবার মাঝে মাঝে দেখি তিন চারজন মেয়েরা গাড়ি থেকে নেমে সোজা হোটেলের ভিতরে চলে যায়। এভাবে যদি এই আবাসিক হোটেলের নামে যদি নোংরামি চলে তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এখান থেকে কি শিখবে।পলাশ হাউজিং এলাকার রাকিব মিয়া নামের আরেকজন বলেন, দিনে রাতে এ ডিমল্যান্ড আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যক্রম চলে। এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকজন জড়িত থাকায় আমরা কাউকে কিছু বলতেও পারি না। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো অতি দ্রুত যেন এই আবাসিক হোটেলটা বন্ধ করে দেয়া হয়। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পাহারা দিয়ে বাহিরে দালাল চক্রের মাধ্যমে হোটেল মালিক ও ম্যানেজার এক ধরনের সিন্ডিকেট তৈরি করে নারী যৌনকর্মীদের দিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে গোপনে। অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানিয়ে বহুবার অবহিত করা হয়েছে। অদৃশ্য দেন দরবারের কারণে স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতির খবর পেলেই কৌশলে ভবনের গেট বন্ধ করে পিছনের গেট দিয়ে বাহিরে বের করে দিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে কতৃপক্ষ।এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু মোহাম্মদ নাসের আল আমিন বলেন, বিষয়টি আমিও জেনেছি আমরা গত শুক্রবারে কোনাবাড়ীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল গুলোতে অভিযান পরিচালনা করে ১০ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তবে কেউ যদি হোটেলে নারী দিয়ে দেহ ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে তাহলে কাউকে ছাড়তে হবে না। আর আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সব সময় সচেতন রয়েছেন।অতি দ্রুতই এ সমস্ত আবাসিক হোটেলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।আর এ ধরনের চোর পুলিশ খেলা কত দিন চলমান থাকবে এমন প্রশ্ন এলাকাবাসীরসহ সচেতন মহলের। আলোচনা সমালোচনা পুরো এলাকা জুড়ে অদৃশ্য কারণে চলছে প্রতিনিয়ত এসব অসামাজিক কার্যকলাপ। এ ধরনের ঘটনায় সুধী সমাজের সাধারণ লোকজনের প্রত্যাশা দেহ ব্যবসার স্থানগুলো স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর