ঢাকায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত মাদ্রাসা ছাত্র শহীদ মো. রাব্বি মাতব্বরের (১২) মরদেহ মৃত্যুর ৯ মাস পর তার নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্ত শেষে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।শহীদ রাব্বি ঢাকার মিরপুরের তা’লীমুল ইসলাম মাদরাসার হাফেজি বিভাগের ছাত্র ছিল এবং ১০ পারা কোরআন মুখস্থ করেছিল। তিনি বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জুয়েল মাতব্বরের ছোট ছেলে।রাব্বির বাবা জুয়েল মাতব্বর জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাতে মিরপুরের ঢাকা মডেল কলেজের সামনে ছাত্র-জনতার একটি মিছিলে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। এসময় রাব্বি দৌড়ে একটি ভ্যানগাড়ির নিচে আশ্রয় নিলেও পুলিশের ছোড়া গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। পুলিশের চেষ্টা ছিল লাশ ছিনিয়ে নেওয়ার, তবে জনতার বাধায় তা সম্ভব হয়নি।ঘটনার রাতেই পরিবারের পক্ষ থেকে রাব্বির মরদেহ গলাচিপায় নিয়ে আসার চেষ্টা করলে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বাধা দেয় এবং হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন জুয়েল মাতব্বর। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি রাব্বির লাশ মিরপুর গোরস্থানে দাফন করেন।গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করলে বিচারিক আদেশে গত ১০ এপ্রিল মিরপুর গোরস্থান থেকে রাব্বির মরদেহ উত্তোলন করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। রবিবার (১৩ এপ্রিল) তার ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা পটুয়াখালীর গলাচিপার উদ্দেশে রওনা হন।সোমবার ১৪ এপ্রিল ভোররাতে মরদেহ নিজ বাড়ি পৌঁছায় এবং সকাল সাড়ে ১১টায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুর রহমান।এদিকে, এ ঘটনার জেরে রাব্বির পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকার কাফরুল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় হুকুমদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০–৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন কাফরুল থানার উপপরিদর্শক মো. বাশার।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর