বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই। ৮৯ বছর বয়সে পেরুর লিমায় পরিবার-পরিজনের কাছে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।  সোমবার (১৪ এপ্রিল) পরিবারের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতি প্রকাশ করেন ইয়োসার ছেলে আলভারো বার্গাস ইয়োসা। সেখানে বলা হয়, ‘গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার বাবা মারিও বার্গাস ইয়োসা আজ লিমায় মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তিনি ছিলেন আমাদের সঙ্গে, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিদায় নিয়েছেন।’  ১৯৩৬ সালে পেরুর দক্ষিণাঞ্চলের আরেকিপা শহরে জন্ম নেওয়া ইয়োসা প্রথম জীবনে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায় বসবাস করেন, যেখানে তার দাদা পেরুর কনসাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। পরবর্তীতে তিনি সামরিক স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং লিমার স্যান মার্কোস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।  সাহিত্যজীবনের শুরু হয় ১৯৫২ সালে ‘লা গাইড দেল ইনকা’ নামে একটি নাটক দিয়ে। পরে সাংবাদিকতা ও ব্রডকাস্টিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পড়াশোনার জন্য যান মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সেখান থেকে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন।  তার প্রথম উপন্যাস ‘লা সিউদাদ ই লস পেররোস’ (The Time of the Hero) প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে, যা পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এবং বহু ভাষায় অনূদিত হয়।  মারিও বার্গাস ইয়োসার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘কনভারসেশন ইন দ্য ক্যাথেড্রাল’ (১৯৬৯), ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’ (১৯৭৭), এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ (১৯৮১)। ‘আন্ট জুলিয়া’ অবলম্বনে ১৯৯০ সালে নির্মিত হয় ‘টিউন ইন টুমরো’ চলচ্চিত্র, যেখানে অভিনয় করেন কিয়ানু রিভস ও বারবারা হারশি।  শুধু সাহিত্যে নয়, রাজনীতি ও অর্থনৈতিক বিষয়েও তার লেখনী ছিল সুপ্রতিষ্ঠিত। ১৯৯০ সালে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন, যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডে আলবের্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। এরপর স্পেনে পাড়ি জমান এবং ১৯৯৩ সালে স্পেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এক বছর পর তিনি সেরভান্তেস পুরস্কারে ভূষিত হন।  ২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ইয়োসা। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তার ‘মানবিক চিত্র ও সমাজ বিশ্লেষণে গভীরতা ও সৌন্দর্যের’ জন্য তাকে এই সম্মান দেয়। সেই সময় এক সাক্ষাৎকারে তিনি ফরাসি সাহিত্যিক গুস্তাভে ফ্লবার্তকে নিজের প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মৃত্যুতে পেরুর প্রেসিডেন্টসহ দেশটির জনগণ ও সাহিত্যমহলে নেমে এসেছে গভীর শোক। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে সামাজিক মাধ্যমে শোকবার্তা জানানো হয়েছে।  বার্গাস ইয়োসার তিন সন্তান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বাবার পাঠকরা পৃথিবীর যেখানেই থাকুন না কেন, তার দীর্ঘ, ঘটনাবহুল ও সৃষ্টিশীল জীবন ও সাহিত্যকর্মের জন্য গর্বিত হবেন। তার রেখে যাওয়া সাহিত্যসম্ভারই তাকে অমর করে রাখবে।’সূত্র: রয়টার্সএইচএ

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
ইরানকে ন্যাটো নেতাদের হুঁশিয়ারি
ইরানকে ন্যাটো নেতাদের হুঁশিয়ারি

ইরানকে কড়া হুঁশিয়ার বার্তা দিলেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর নেতারা।

জিম্মিদশা থেকে মুক্তির এক মাস পর স্বজনদের কাছে ফিরলেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক
জিম্মিদশা থেকে মুক্তির এক মাস পর স্বজনদের কাছে ফিরলেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক

জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হওয়ার একমাস পর এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক দেশে ফিরেছেন, আবেগাপ্লুত তাদের পরিবারের সদস্য এবং স্বজনেরা। মার্চ Read more

গাজীপুরের তিন উপজেলায় প্রার্থী ৩৬ জন
গাজীপুরের তিন উপজেলায় প্রার্থী ৩৬ জন

নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা অংশ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

খায়রুল কবিরের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই
খায়রুল কবিরের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই

নরসিংদীতে ছাত্রদলের দুইপক্ষের সংঘর্ষে দুই নেতা হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন