ইউনিয়ন পরিষদ সচিব নাজমুলের স্বেচ্ছাচারিতায় দুর্নীতির আখড়া ১নং ভদ্রঘাট ইউনিয়নসিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ১নং ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ ও জন্ম সনদ সংশোধনে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পরিষদের সচিব নাজমুল, প্যানেল চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, হিসাব সহকারী ইমরান হোসেন মানিক ও উদ্যোক্তা লাভলী খাতুনের বিরুদ্ধে। প্রতিদিন সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষকে জিম্মি করে গড়ে ৮-১০হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্র এমনি অভিযোগ স্থানীয় ইউনিয়ন বাসীর।রবিবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, প্রায় তিন বছর যাবৎ ঐ ইউনিয়নের সচিব পদে কর্মরত আছেন নাজমুল হোসেন। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে তার স্বেচ্ছাচারিতা অনিয়ম দুর্নীতির।স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে দুর্নীতি করে মাসে লাখ টাকা অবৈধ ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক দেশে জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনা ফি-তে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। শিশুদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পঁচিশ টাকা ও পাঁচ বছরের উর্ধ্বে সকল বয়সী নাগরিকের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ টাকা এবং জন্ম তারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে একশ’ টাকা ফি নির্ধারিত থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রত্যেকটিতে দ্বিগুণ হারে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন সেবাগ্রহীতারা।কথা হয় উপস্থিত সেবা নিতে আসা দোগাছী গ্রামের সাজেদা বেগমের সাথে তিনি বলেন, আমার বোনের জন্ম নিবন্ধন করতে এসেছি।একটা জন্ম নিবন্ধন বাবদ উদ্যোক্তা লাভলী খাতুনকে ২০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয়েছেঝাটিবেলাই গ্রামের হাসান আলী ও মমতা বেগমের দুটি জন্ম নিবন্ধন বাবদ ভুক্তভোগী মানিক বলেন, ২৫০ টাকা করে দুটি জন্ম নিবন্ধনে মোট ৫শ টাকা পরিষদের হিসাব সহকারী ইমরান হোসেন মানিকে দিয়ে করেছি।জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যক্তি বলেন, যকটুকু জানি সংশোধন করতে ৫০ টাকা আর বয়স সংশোধন ১০০ টাকা কিন্তুু তারপরেও আমার কাছে থেকে ২০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা নিরুপায়। দেখার বা বলার কেউ নেই।সরকারি নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিষয়ে উপস্থিত অনেকেই বলেন, ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনে পতিত আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান চলে যাওয়ার পর সচিব নাজমুলের বেপরোয়া দুর্নীতি আরো বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যোকসাজোস হিসাব সহকারী ও উদ্যোক্তা একাট্টা হয়ে নানা টালবাহানা করে গরীবের অর্থ অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।এ বিষয়ে পরিষদের হিসাব সহকারী ইমরান হোসেন মানিক জানান, অতিরিক্ত যে টাকা নেওয়া হয় তার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লিয়াকতকে টাকা দিতে হয়। আমাদের করার কিছুই নেই।প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) নাজমুল ইসলাম অতিরিক্ত টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সরকারি ফি বাবদ অতিরিক্ত আরো ৫০ টাকা বেশি নেওয়া হয়। তার চেয়ে বেশি নেওয়া হয় না। কাগজ আর কালি কেনা হয়। প্রতিবেদক জিজ্ঞেস করেন, প্রতি অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে কাগজ কালি ক্রয় বাবদ ৩৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তাহলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কি করা হয় জানতে চাইলে এ বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনামিকা নজরুল বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমেই জানতে পারলাম। তথ্য প্রমানের ভিত্তিত্বে অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ইউএনও মহোদয়কে অবগত করেন। পরে আমি বিষয়টি দেখছি। সরকারি ফি’র বাহিরে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার কোন ধরনের সুযোগ নেই।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর