নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী, ৪ বছরের ছেলে সন্তান ও জেঠাসকে হত্যার পর লাশ খন্ড বিখণ্ড করে বস্তায় ভরে মাটির নিচে পুতে রাখে ইয়াছিন। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে গর্ত খুঁড়ে অর্ধগলিত তিনটি লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। তিন জনকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় হত্যার শিকার লামিয়ার স্বামী মাদক ব্যবসায়ী ইয়াছিনকে। নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুর পাড় এলাকার খলিল হাজীর দ্বিতীয় তলা বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে গত ৭ এপ্রিল রাতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম।নিহতরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া পুকুর এলাকার মৃত আব্দুস ছামাদের মেয়ে স্বপ্না আক্তার (৩৫), লামিয়া আক্তার (২২) ও লামিয়া আক্তারের ছেলে আব্দুল্লাহ হাবিব (৪)। স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দেড়টার দিকে খলিল হাজীর বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে অন্য একটি বাড়ির পিছনে দেওয়ারে পাশে মাটির নিচ থেকে মানুষের একটি হাতের কিছু অংশ দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। তখন থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে মাটি খুঁড়তেই একে একে বের হয়ে আসে খণ্ড বিখণ্ড তিন জনের মৃতদেহ। স্বপ্না আক্তার ও লামিয়ার মাথা এবং হাত বিচ্ছন্ন অবস্থায় ছিল আর শিশু আব্দুল্লাহ হাবিবের লাশ খণ্ডিত ছিলনা। তবে তিনটি লাশই ছিল বস্তায় ভরা।আব্দুস ছামাদের আরেক মেয়ে মুনমুন আক্তার জানান, একই এলাকার ইয়াছিনের সঙ্গে লামিয়ার বিয়ে হয়। ইয়াছিন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা খলিল হাজীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। লামিয়া কাজ করতেন একটি পোশাক কারখানায়। স্বপ্না আক্তার প্রতিবন্ধী ও স্বামী পরিত্যাক্তা। ফলে স্বপ্না তার ছোট বোন লামিয়ার বাসাতে থাকতেন। কি কারণে ইয়াছিন স্ত্রী সন্তানসহ তিন জনকে হত্যা করেছে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেন নি।মুনমুন আরও জানান, একই এলাকায় তাদের নিজস্ব বাড়ি ছিল। বাবা মৃত্যুর পর তারা বাড়িটি বিক্রি করে দেয়। ঈদের আগে বাড়ি বিক্রির ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে। এ টাকা কোথায় কিভাবে খরচ করা হয়েছে এ নিয়ে লামিয়ার সঙ্গে বিরোধ দেখা দিয়েছিল। স্বপ্নার স্বামী না থাকা ও প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার অংশের টাকাও ইয়াছিনের কাছেই ছিল। তবে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে। মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে ছিল। কিছু দিন আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়েছে। সিদ্ধিগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, তিন জনকে হত্যা করা হয়েছে গত ৪ দিন আগে নিজের ভাড়া ভাসায়। পরে দুজনের লাশ খণ্ড বিখণ্ড করে বাড়ির সামনে অন্য একটি বাড়ির দেওয়ালের পাশে মাটির নিচে পুতে রাখা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে লামিয়ার স্বামী ইয়াছিন তাদের হত্যা করেছে। ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, খন্ড বিখন্ড তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর