ভালোবাসার টানে ডেনমার্ক থেকে বরগুনায় প্রাক্তন স্বামীর কাছে ফিরেছেন রোমানা মারিয়া বসি নামে এক ড্যানিশ নারী। আর এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকা জুড়ে। নানা বাঁধা পেড়িয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর পর ভালোবাসার প্রিয় মানুষ মহবুবুল আলম মন্নুর কাছে ফিরে তিনি প্রমাণ করেছেন প্রকৃত ভালবাসা কখনোই হারিয়ে যায় না। বরগুনা পৌরসভার সদর থানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মান্নু দৈনিক আমাদের সময়ের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ডেনমার্ক থেকে ঢাকায় এসে বিকেল ৫ টার দিকে মহবুবুল আলম মন্নুর সঙ্গে বাসযোগে বরগুনায় আসেন রোমানা মারিয়া বসি। পরে সন্ধ্যায় মান্নুর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুনরায় দ্বিতীয়বার তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে প্রবাসে থাকাকালীন ডেনমার্কের বাসিন্দা রোমানা মারিয়া বসিকে ভালবেসে বিয়ে করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন বরগুনার মাহবুবুল আলম মান্নু। এর তিন বছর পর ২০০০ সালের দিকে মারিয়া আবারও ডেনমার্কে চলে যায়। তবে কয়েক মাস পর মান্নুুরও ডেনমার্কে যাওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তিনি আর যেতে পারেননি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন দুই দেশে থাকলেও ২০০৩ সাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। পরবর্তীতে পরিবারের চাপে রোমানা অন্যত্র বিয়ে করলে মান্নুর সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয় যায়। অপরদিকে মান্নুকেও পরিবারের সদস্যরা দ্বিতীয় বিয়ে করতে বললে তিনি রোমানার ভালোবাসা ত্যাগ করতে পারেননি। প্রিয়তমার প্রতীক্ষায় প্রায় ২৪ বছর কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গতায়। সবশেষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রোমানা আবারও খুজে পায় মান্নুকে। দুজনের মধ্যে আলাপচারিতায় পুনরায় বিয়ে করার সম্মতিতে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। আর এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে রোমানাকে দেখতে মান্নুর বাড়িতে ভীড় করছেন মান্নুর বিভিন্ন সহকর্মীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। মাহবুবুল আলম মান্নুর বড় বোন পিয়ারা বেগম বলেন, এর আগে রোমানা যখন মান্নুর সঙ্গে ছিল আমাদের সঙ্গে তার ভালোই সম্পর্ক ছিল। ডেনমার্ক চলে যাওয়ার পরও আমাদের সঙ্গে কয়েক বছর পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল। দীর্ঘ বছর পর মান্নু যখন আমাদের জানায় রোমানাকে সে ফিরে পেয়েছে এবং বাংলাদেশে আসতে চায়, আমরা তাকে আসার জন্য বলি। রোমানা ফিরে আসায় আমারা আনন্দিত।রেহানা বেগম নামে মান্নুর এক বোনের মেয়ে বলেন, আমরা মামাকে বহুবার বিয়ের কথা বলেছি। কিন্তু সে কখনোই রাজি হয়নি। পরে আমরা বুঝতে পেরেছি তার ভালোবাসার মানুষকে তিনি ভুলতে পারেননি। পরে আমরা আর তাকে বিয়ের জন্য না বললেও স্ত্রী রোমানাকে ফিরে পাবার জন্য চেষ্টা করতে বলেছি। এছাড়া আমরাও আল্লাহর কাছে চেয়েছি যাতে আবারও তাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়। এ বিষয়ে মাহবুবুল আলম মান্নু বলেন, বিয়ের পর ২০০০ সালে এক প্রকার জোর করেই রোমানাকে ডেনমার্কে পাঠিয়ে দেই। পরে আমার যাওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে আর যাওয়া হয়নি। এছাড়াও আমি কখন যেতে পারবো তা বলতে না পেরে ওর বাবা মায়ের কথা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে বলি। পরে তিন বছর পর্যন্ত আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাবা মায়ের সিদ্ধান্তে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে রোমানা। পরবর্তীতে ৭ থেকে ৮ বছর আগে ওই স্বামীর সঙ্গে মনের মিল না হওয়ায় তাকে ডিভোর্স দিয়ে পুনরায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা শুরু করে রোমানা। পরে ফেসবুকে আমার আইডি খুজে পেলে গত জানুয়ারী মাস থেকে আবারও রোমানার সঙ্গে কথপোকথন শুরু হয়। এক পর্যায়ে আমাকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে সম্মতি জানিয়ে রোমানা বাংলাদেশে চলে এসেছে।আরইউ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর