নেত্রকোনায় পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক‘র সহযোগিতায় কাইলাটি গ্রামে নবযাত্রা কৃষক সংগঠন লুত পিঠা উৎসবের আয়োজন করে।বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের কাইলাটি গ্রামে নবযাত্রা কৃষক সংগঠন ও নেত্রকোনা সবুজ সংহতি টিমের আয়োজনে ‘লুত পিঠা উৎসব’, ‘গ্রামীণ খেলাধুলা’ ও ‘কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা ও গ্রামীণ সংস্কৃতি’ শীর্ষক গ্রাম আলোচনার আয়োজন করা হয়। আলোচনার পর উপস্থিত কৃষকদের মাঝে কয়েক ঘণ্টা ব্যাপি বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন চলে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তামান্না আক্তার, তারেক আল হাসান, সাংবাদিক মির্জা হৃদয় সাগর,তানভীর হায়াৎ খান, শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার, বারসিক‘র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, সহকারী সমন্বরকারী শংকর ম্রং,প্রকৌশলী রোদৌসী ভট্টাচার্য্য , নবযাত্রা কৃষক সংগঠনের সভাপতি নুরুল ইসলাম, যুবক ও গ্রামের নারী পুরুষ শিশুসহ শতাধিক মানুষ। প্রধান অতিথির আলোচনায় শিক্ষা সংস্কৃতি পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি নাজমুল কবীর সরকার বলেন, “গ্রামীণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় কৃষক ও কৃষির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ‘সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার করার জন্য উদ্যোগ প্রয়োজন। ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান এবং উৎসবগুলো আয়োজন ও তাতে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য কাজ করছে। এতে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করি। গ্রামীণ সংস্কৃতির মধ্যে অনেকটাই চোখে পড়ে না আগের মতো। শিশু-কিশোরদের মধ্যে নেই কানামাছি বৌ বৌ, গোল্লাছুট, গুডুলা, বৌচি, কুতকুত, দাড়িয়াবাঁধা, ডাংগুলি, মার্বেল, হা-ডু-ডু, কাবাডি, মোরগ লড়াই, ষাঁড়ের লড়াই, হাড়িভাঙা, লুকোচুরি ঢ়াং, দড়ির লাফ, এক্কা-দোক্কা, আগডুম-বাগডুম, মতো খেলাগুলো।’কৃষক এনামুলক হক বলেন, “আধুনিকায়নের ফলে গ্রামীণ জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন আর গ্রামে বসবাস করতে চায় না। তারা শহরে বসবাস করতে আগ্রহী। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রসার ঘটছে না। আবার শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে মানুষ এখন আর গ্রামীণ খেলাধুলা ও বিনোদনের প্রতি আগ্রহী নয়। তারা আধুনিক খেলাধুলা ও বিনোদন উপভোগ করতে পছন্দ করে। প্রযুক্তির প্রসার গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মানুষ এখন মোবাইল ফোন, টিভি, ইন্টারনেট ইত্যাদির মাধ্যমে আধুনিক সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হচ্ছে। ফলে তারা গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই আজ বৈশাখকে সামনে রেখে গ্রামীণ খেলাধুলা,নেত্রকোনা অঞ্চলের ঐতিহ্য লুত পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। একমণ ওজনের একটি বৃহৎ লুতপিঠা তৈরী করা হলো। এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাইস কেক ”। অনুষ্ঠান শেষে লুত পিঠা দিয়ে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয় ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ কারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর