মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সুজন মিয়া হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি জানান পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন।লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহ রহমান ও হত্যার পরিকল্পণাকারী নজির মিয়া মুজিবের পূর্ব শত্রুতা ছিল। এরই জের ধরে নজির মিয়া মিসবাহকে হত্যার পরিকল্পণা করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি লক্ষনের মাধ্যমে মিসবাহকে মারার জন্য টাকার বিনিময়ে লোক ভাড়া করে নজির মিয়া মুজিব। নজির মিয়া ভাড়াটিয়া খুনীদের লক্ষনের নিকট মোবাইলের মাধ্যমে টার্গেটের ছবি প্রেরণ করে। ঘটনার দিন বানিজ্য মেলায় ভাড়াটিয়া খুনীরা ভিকটিম সুজনকে দেখে মিসবাহ ভেবে নজির মিয়া মুজিবকে কল দিয়ে বলে, যে লোকের ছবি পাঠিয়েছো সেই লোককে আমরা পেয়েছি। নজির মিয়া মুজিব ভাড়াটিয়া খুনীদের ভিডিও কলের মাধ্যমে টার্গেট দেখে নিশ্চিত করতে বলে। ভিকটিম সুজনকে দুষ্কৃতিকারী আব্দুর রহিম ইমুতে ভিডিও কল দিয়ে নজির মিয়া মুজিবকে টার্গেটকে দেখায়। তখন ভাড়াটিয়া খুনীরা জানায় তোমার পাঠানো ছবির সাথে মিল আছে বলিলে নজির মিয়া মুজিব তাদেরকে মারতে বলে। ঘটনার দিন ফুসকা চটপটির দোকানের পাশে ফুটপাতের উপর আইনজীবি সুজন মিয়াকে চেয়ারে বসা দেখে আসামিরাসহ আরও অন্যান্য ১০/১২ জন অতর্কিত আক্রমণ করে ধারালো চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে।তিনি বলেন, ৬ এপ্রিল রোববার রাত ১১টার দিকে পৌরসভার সামনে ফুচকার দোকানের পাশে আইনজীবি সুজন মিয়াকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন মিলে ধারালো চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং- ১৫) করেন।পুলিশ সুপার আরও বলেন, মামলার পর শহরের বিভিন্ন এলাকার সিসি ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে বুধবার মামলার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সদর উপজেলার খালিশপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে নজির মিয়া মুজিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত আরও চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- পৌর শহরের রঘুনন্দনপুর গ্রামের মৃত সিজিল মিয়ার ছেলে মো. আরিফ মিয়া, দিশালোক এলাকার আনসার মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ সোহান, রাজনগরের মাথিউরা চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে লক্ষন নাইডু ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার কাশিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম।এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে। পুলিশ অন্যান্য পলাতক হত্যাকারীদের পরিচয় উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে, তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে হত্যাকারীদের নাম প্রকাশ করছে না।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা মাখার ওসি জাফর হোসেনসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
Source: সময়ের কন্ঠস্বর