পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে গাজায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে এক গ্লোবাল স্ট্রাইক, বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানবিক মূল্যবোধ থেকে পরিচালিত এই কর্মসূচির আয়োজন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে সমবেত হয়ে সমাবেশ শুরু করেন। তারা গাজায় ইসরায়েলের চালানো নির্মম হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, প্রোক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।বক্তারা বলেন, গাজায় শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্মম গণহত্যা চলছে, তা ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধের অন্যতম। আমরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা দাবি করছি। বক্তব্যপর্ব শেষে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অংশগ্রহণ করেন।বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘হিউম্যানিটি ফর প্যালেস্টাইন’, ‘ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করুন’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন পুরো ক্যাম্পাস।সমাবেশে আরও বলা হয়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রামে বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে এক কণ্ঠে প্রতিবাদ জানাতে হবে। পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে।সমাবেশ শেষে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সকলেই জানি, ১৯১৭ সাল থেকে ইসরায়েলের জন্মের প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর জাতিসংঘের দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর প্রায় ৭০-৮০ বছর ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যে দমন-পীড়ন চলছে, তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। একজন মানুষ হিসেবে আমি চাই না কাউকে গুলি খেতে দেখতে। আমাদের শিক্ষকমণ্ডলী, যারা লেখালেখি করেন, তারা কীভাবে তাদের কলম ব্যবহার করছেন, সেটাও ভাবনার বিষয়। ‘The pen is mightier than the sword’—আপনারা লেখার মাধ্যমে প্রতিবাদ করুন। ফেসবুকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, পত্রিকায়, যুক্তিসম্মত ও তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন লিখুন। আপনারা তো শত শত গবেষণা-পত্র লেখেন, সেগুলোর মতোই শক্তিশালী হোক এই প্রতিবাদও।ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইসিই) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা এই বর্বরতার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জানাতে আজ এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা চাই, মানবতার পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে সব মানুষ সোচ্চার হোক। গাজায় অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধ হোক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।এছাড়াও বক্তব্য দেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, প্রোক্টর, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। শিক্ষার্থীরাও তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর