বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব আয়োজন করাই সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে আশ্বস্ত করেছি- একবার আমাদের দায়িত্ব সম্পন্ন হলে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর হলে, আমরা একটি মুক্ত, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবো।’শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের সংবিধানগত অধিকার নিশ্চিত করতে, বিশেষ করে নারী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের জনগণ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ভয়াবহ গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন। তারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও স্বাধীন সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, গত ১৫ বছরে আমাদের জনগণ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ, ক্রমাগত তাদের অধিকার হারিয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবক্ষয় ঘটেছে এবং নাগরিক অধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে।এ দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে জনগণের বিপুল প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং প্রায় দুই হাজার নিরপরাধ মানুষ, যার মধ্যে ১১৮ জন শিশু, এই আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করেন। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ আবার নতুনভাবে জন্ম নেয় বলে তিনি জানান।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সুদূরপ্রসারী সংস্কার বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সুশাসন, দুর্নীতি দমন এবং অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।তিনি জানান, সংস্কার পরিকল্পনার অন্যতম মূল ভিত্তি। অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা, সরকারি প্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন সংস্থা এবং সংবিধান সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, যা জনসাধারণের মালিকানা, জবাবদিহি ও কল্যাণ নিশ্চিত করবে।প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ কমিশনগুলো এরই মধ্যে তাদের সুপারিশ প্রদান করেছে, যা সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। তার নেতৃত্বে ও ছয়টি কমিশনের প্রধানদের অন্তর্ভুক্তিতে সাত সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের মাধ্যমে কমিশনগুলোর সুপারিশসমূহ গৃহীত ও কার্যকর করা হবে।এমআর-২
Source: সময়ের কন্ঠস্বর