সোমবার (২৫ মার্চ) সারাটাদিন উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় কেটেছে ক্রিকেটপ্রেমী সকল মানুষের। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব যেন থমকে গিয়েছিলো তামিম ইকবালের ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের খবরে। কিছুক্ষণের জন্য তার হৃদযন্ত্র বন্ধই ছিল বলতে গেলে। এমন পরিস্থিতি থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরার ঘটনা খুবই কম। হাজারে একজনও পারে কি না সন্দেহ। তামিম ইকবাল সে শঙ্কা গতকালই কাটিয়ে উঠেছেন। দ্রুত চিকিৎসা, চিকিৎসকদের নিবিড় পরিচর্যা আর দেশবাসির দোয়ার বদৌলতে বিকাল নাগাদ তামিমের শঙ্কা কাটতে শুরু করে। হার্টে যে ব্লক ধরা পড়েছিল, সেখানে রিং বসানো হয়েছিলো। গতকাল দুপুরের পরই জ্ঞান ফেরে তার। মায়ের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন।যদিও বিকালের দিকে সাভারের কেপিজে হাসপাতালের ডাক্তাররা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, তামিম ইকবাল পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। রাতের দিকে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তখন জানা গেছে, তামিমের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে।সোমবার সারাদিন কেপিজে হাসপাতালের সামনে ভিড়ও ছিল অনেক বেশি। বিসিবি কর্মকর্তা, তামিমের পরিবার, সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটার এবং তার ভক্ত-সমর্থককুল – সারাদিন ছিলো কেপিজে হাসপাতালে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা ছাড়া অন্যরা চলে যেতে থাকেন।আজ সকালে হাসপাতালে ভিড় নেই। সেখানে তামিমের পরিবারের সদস্যরা ছাড়া আর কেউ নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকালের চেয়ে অনেকটাই উন্নতির দিতে তার অবস্থা। যে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন, সেটাও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে দেশের প্রথমসারির একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে এখন কিছুটা হাঁটার চেষ্টাও করছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। তাকে কিছু সময়ের জন্য কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আত্মীয়–স্বজনের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য। এরপর আবার নিবিঢ় পরিচর্যা কেন্দ্রে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।গতকাল বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শাইনপুকুরের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল মোহামেডানের। অধিনায়ক হিসেবে টস করতেও নামেন তিনি। এরপরই অস্বস্তি অনুভব হতে থাকে তার। বুকে ব্যথা হয়। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চলেও আসেন মাঠে।কিন্তু এরপরই অবস্থা খারাপ হতে থাকলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে নেয়া হয় কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে। হেলিকপ্টারও রেডি করে রাখা হয় তাকে দ্রুত ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে আনার জন্য। কিন্তু ততক্ষণে তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তাকে আর হেলিকপ্টারে ওঠানোর মত অবস্থা ছিল না। কেপিজে হাসপাতালেই চিকিৎসা করতে হয়।কেপিজে হাসপাতালেই তার এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্টিং করানো হয়। স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত ব্লক পড়া ধমনীতে রিং পরানো হয়।তামিম ইকবাল ২০১০ – ২০১১ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই তার সেঞ্চুরি রয়েছে। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করেন।২০১১ সালে তামিম উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক ম্যাগাজিন কর্তৃক বছরের সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন। গ্রেম সোয়ান ও বীরেন্দ্র শেবাগকে পেছনে ফেলে তামিম এই খেতাব জিতে নেন।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর