চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বহুল আলোচিত ও সমালোচিত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মনোয়ারা বেগমকে ফের সরিয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। মাত্র ১৭ দিন আগে কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুনঃবহাল হওয়ার পর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে আবারও তাকে বদলি করা হলো।শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা। তিনি বলেন, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তাই আপাতত তাকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মনোয়ারা বেগমকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। ওই সময় কর্ণফুলীর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন, এক দুর্নীতিবাজ স্যানিটারির হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি, এবং সিভিল সার্জনকে ধন্যবাদ জানান।তার স্থলে কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পান মাজেদা বেগম, যিনি এর আগে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু মাত্র দুই মাস ১৭ দিন পর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে মনোয়ারা বেগমকে পুনরায় কর্ণফুলীতে ফিরিয়ে আনা হয়।নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, জরুরি সিদ্ধান্তে কর্ণফুলীতে ফিরিয়ে আনা হলেও প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে ছিলেন মনোয়ারা বেগম। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বাজার তদারকির নামে চাঁদাবাজি, স্বাস্থ্য সনদ প্রদানের নামে ঘুষ নেওয়া, অভিযান পরিচালনার আগেই তথ্য ফাঁস করা এবং ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ছিল।চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসার চাহিদার ভিত্তিতেই তাকে ফের পদায়ন করা হয়েছিলো। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা ও প্রশাসনিক কারণে তাকে আবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।”চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসআইটি কোর্স পাস করা জুনিয়র স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়মবহির্ভূতভাবে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পদায়ন করছে। অথচ দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ রয়েছে, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্পষ্টভাবে বলেছে, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পদায়ন, বদলি ও পদোন্নতির বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জন বারবার এসব নিয়ম ভঙ্গ করে যাচ্ছেন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্ববর্তী আদেশও মানা হয়নি।সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, স্বাস্থ্য খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর