বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে আলু চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। আলু একটি লাভজনক চাষ। উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আলুর চাষ। উপকূলীয় অঞ্চল বরগুনা পাথরঘাটার মাটি উর্বর ও আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলে থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে আলুসহ রবি শস্যের চাষ। আলুসহ এই সকল রবি শস্য মজুদ করার সঠিক ব্যবস্থা না থাকার কারণে উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। মজুদ করার জন্য হিমাগার না থাকায় প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মৌসুমি ফসল। উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষকরা অতিকষ্টে বিভিন্ন তরিতরকারি ও ফলমূল উৎপাদন করছেন। কিন্তু মজুত করে রাখার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে কম মূল্যে এসব কৃষি পণ্য বিক্রি করতে হয়। এতে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হিমাগার না থাকায় হাজার হাজার মেট্রিক টন আলু মাঠ থেকে সংগ্রহ করে মাঠে বসে কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়। কৃষকরা পাচ্ছে না তাদের উৎপাদিত আলুর ন্যায্য মূল্য ।উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুসারে, উপজেলায় এ বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৪০ হেক্টর। উপকূলীয় অঞ্চলে আলু চাষ ভালো হওয়ায় এবছর লক্ষ্য মাত্রার অধিক ৫৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এ বছর উপজেলায় আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার মেট্রিক টন। সবজি উৎপন্ন হয় এর থেকে অনেক বেশি। উপজেলায় কৃষকদের উৎপাদিত তরি-তরকারি ও ফল-মূলের মধ্যে রয়েছে- আলু, মিষ্টি আলু, আদা, কাঁচা মরিচ, হলুদ, টমেটো, শসা, বেগুন ও কুমড়া। ফলমূলের মধ্যে কলা, আনারস, পেঁপে, কাঁঠাল ও আমসহ অনেক ফল। মাটির উর্বরতা, আবহাওয়া এবং উন্নত চাষপ্রযুক্তির ফলে দেশে আলুর উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আলু চাষী রহিম বলেন , এ বছর ১৬০ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছি এই জমিতে আলু চাষ করতে জমি চাষ, বীজ আলু, পানি সেচ, কীটনাশকসহ সকল খরচ মিলিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের এই সকল এলাকায় প্রতিবছর আলু ভালো হয়। এ বছরের প্রতি একর জমিতে প্রায় ২৮০ থেকে ৩০০ মন আলু পাচ্ছি। বর্তমান বাজারে প্রতি মন আলু বিক্রি করছি ৮৫০ থেকে ৮৬০ টাকা। আমার এই জমি থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকার আলু বিক্রি করা যাবে। এত পরিশ্রম দিয়ে সীমিত লাভে এই আলু গুলো বিক্রি করতে হচ্ছে তাই আমরা আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছি । কিছুদিন মজুদ করে আলুটা যদি বিক্রি করা যেত তাহলে আমরা অধিক দামে আলু বিক্রি করতে পারতাম। আমাদের মত সাধারন চাষীদের আলু চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে তাহলে। আলু চাষী আলতাফ বলেন, আলু চাষ করে আমরা এখন আলু বিক্রি করতে পারি প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা। আর তিন থেকে চার মাস পর এই আলু আমাদেরকে কিনে খেতে হবে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা করে। আমাদের চাষের আলু কিছুদিন পর আমাদের অধিক দামে কিনে খেতে হয় । তাই আমাদের দাবি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের একটি মিনি হিমাগারের ব্যবস্থা করা জন্য । হিমাগার ব্যবস্থা না থাকলে আর কিছু বছর পর আলু চাষি আমাদের এলাকার খুঁজে পাওয়া যাবে না।পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন , বিগত বছরের চেয়ে এ বছর আলুর ফলন ভালো । পাথরঘাটায় আলু সংরক্ষণের জন্য মিনি কোল্ডস্টোরেজ এর ব্যবস্থা হলে পাথরঘাটা কৃষকরা আলু চাষে উৎসাহিত হতো এবং সঠিক সময় সঠিক মূল্যে আলু বিক্রি করতে পারবে।তিনি আরও বলেন, ’’কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাথরঘাটায় মিনি কোল্ডস্টোরেজ এর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।’’কৃষকদের সরকারি কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ১০ বিঘা জমিতে ৭ জন কৃষককে উচ্চ ফলনশীল জাতের প্রদর্শনী দিয়ে সকল সহযোগিতা করা হয়েছে। এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর