চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মুদি দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির অভিযোগে এক বিএনপি নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী নুর হোসেন মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বাঁশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন।মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- শেখেরখীল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল কবির মেহেদী (৫২), রাজিবুল কাদের (৩৮), ফজলুল কাদের (৪৫) এবং মো. রুবেল (৩৫)।এজাহার সূত্রে জানা যায়, নুর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শেখেরখীল রাস্তারমাথা এলাকায় একটি মুদি দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন। ঘটনার দুই দিন আগে বিএনপি নেতা ফজলুল কবির মেহেদী তার দোকানে এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় দোকান ছেড়ে দিতে হবে বলে হুমকি দেন।এরপর ১৬ মার্চ গভীর রাতে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দোকানে হামলা চালান। দরজা ভেঙে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন এবং নুর হোসেনের স্ত্রী ও কন্যাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দোকানের ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা, মালামাল লুটপাট করেন এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন।মামলার বিবরণে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা দোকানের মাইক, মাইকের মেশিন, স্পিকার ও ব্যাটারিসহ মূল্যবান সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যান। নুর হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করার চেষ্টা করলে তার হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় ফজলুল কবির মেহেদী অস্ত্র উঁচিয়ে বলেন, “থানা-পুলিশ আমাদের কথায় চলে।” আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তিনি প্রকাশ্যে নুর হোসেনকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।মামলার বাদী নুর হোসেন সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, “সেদিন আমার দোকানে লুটপাট চালানোর পর এখন আমাকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মেহেদীর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে থানা পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহায়তা না পেয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আমার সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি। দোকানের সব মালামাল লুট হয়ে যাওয়ার পর এখন মেয়েদের নিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।”বাদীর আইনজীবী তকছিমুল গণী চৌধুরী ইমন সময়ের কণ্ঠস্বর-কে জানান, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, যা দ্রুতই শুরু হবে।অভিযোগ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা ফজলুল কবির মেহেদী সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, “আমি একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। কেন আমি চাঁদাবাজি করব? মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক। আমি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না।”উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও করার অভিযোগ ওঠে ফজলুল কবির মেহেদীর বিরুদ্ধে। এছাড়া, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় চাম্বল বাজারে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায়ও তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে, যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।এফএস
Source: সময়ের কন্ঠস্বর