চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যশিল্প এলাকায়, নগরীর বাকলিয়া থানাধীন চাক্তাই অঞ্চলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই উৎপাদন ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে খোলা রোদে শুকানোর দায়ে চারটি সেমাই ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই-এর তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে বিভিন্ন অনিয়ম উদঘাটিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চাক্তাই এলাকার চারটি সেমাই ফ্যাক্টরিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান ও রানা দেব নাথ। অভিযানে মেসার্স এমরান সেমাই ফ্যাক্টরি, রফিক ফুড প্রোডাক্টস, মেসার্স আবদুর রহিম সেমাই ফ্যাক্টরি ও মোস্তফা সেমাই ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে।অভিযানে সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোতে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেমাই তৈরি করা, উৎপাদনের সময় কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি না মানা, খোলা আকাশের নিচে রোদে সেমাই শুকানো, সংরক্ষণের অনুপযুক্ত ব্যবস্থা ও খাদ্য নিরাপত্তার ন্যূনতম মানদণ্ড অনুসরণ না করার মতো গুরুতর অপরাধ চিহ্নিত হয়। এসব কর্মকাণ্ড সরাসরি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪৩ ধারার লঙ্ঘন বলে গণ্য হয়।অভিযানে আইন লঙ্ঘনের দায়ে রফিক ফুড প্রোডাক্টসকে এক লাখ টাকা, মোস্তফা সেমাই ফ্যাক্টরিকে এক লাখ টাকা, মেসার্স এমরান সেমাই ফ্যাক্টরিকে ৪০ হাজার টাকা এবং মেসার্স আবদুর রহিম সেমাই ফ্যাক্টরিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভবিষ্যতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্য নিরাপত্তা মান বজায় রাখার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।চাক্তাই এলাকা দীর্ঘদিন ধরে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য পরিচিত হলেও, সঠিক তদারকি না থাকায় কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্যের মানহীন উৎপাদন ও অনিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণ ব্যবস্থা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে। এ ধরনের সেমাই বাজারে এলে তা খাদ্যজনিত নানা রোগের কারণ হতে পারে, যা শিশু ও বয়স্কদের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ।জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের অনিয়ম রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে আহ্বান জানানো হয়, তারা যেন খাদ্যপণ্য কেনার আগে সতর্ক থাকেন এবং মানহীন পণ্য বা স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে অভিযোগ জানান।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর