রাজধানীতে পুলিশের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক লাকি আক্তারের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাকিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।বুধবার (১২ মার্চ) রাত সোয়া ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ল প্রদক্ষিণ শেষে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ২৪-এর বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই। ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি করে যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তারা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের পুলিশ ভাইদের ওপর হামলা করেছে। আমরা বেঁচে থাকতে এই বাংলাদেশে শাহবাগীদের স্থান হবে না।তিনি আরও বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু কুখ্যাত শাহবাগীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। এই বাংলাদেশে আমরা কোনোদিন শাহবাগীদের পুনরুত্থান মেনে নিবো না। আমরা ছাত্রসমাজ, আমাদের দেহে একবিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত তাদের উদ্দেশ সফল হতে দিবো না। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, শাহবাগীরা দেখো আমরা লুঙ্গি পড়ে চলে আসছি। আপনারা দেশের আইন-শৃঙ্খলাকে বিনষ্ট করার জন্য আজকে পুলিশের ওপর হামলা করেছেন। অতি দ্রুত লাকিসহ সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, হাসিনা থেকে শিক্ষা নেন। না হলে আর একটি গণঅভ্যুত্থান দেখতে পাবেন।এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, শাহবাগ নো মোর’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘আমার ভাই কবরে, লাকি কেন বাহিরে’, ‘আমার সোনার বাংলায় শাহবাগের ঠাঁই নাই’, ‘শাহবাগ না জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, শাহবাগের কবর দে’, ‘শাহবাগী হামলা করে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।এদিকে অব্যাহত ধর্ষণ নারী নিপীড়ন হত্যা বন্ধ কর ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করার দাবিতে শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মশাল মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি ও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের পরিচিত মুখ লাকী আক্তার।মশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে লাকী আক্তার বলেন, ‘৭ মাস পরে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্ষক, নিপীড়ক, মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা বলছেন অথচ এই ৭ মাসে অসংখ্য ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন, মব ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ সকল ঘটনায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। উল্টো ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়েছে।’এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনসহ মোট ৯ দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করলে পুলিশ বাঁধা প্রদান করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা রূপ নেয় হাতাহাতিতে এ সময় আন্দোলনকারীদের হামলায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য অভিযোগ উঠেছে। এদিকে আন্দোলনকারীরাও পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর