গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাসাহারা গ্রামে মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ পাশের বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠে ধানগাছ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি। সবুজ ও বেগুনি রঙের ধানগাছ দিয়ে তৈরি এই শস্যচিত্র দেখে পথচারীরা থমকে দাঁড়াচ্ছেন, হৃদয়ে নাড়া দিচ্ছে শহীদের প্রতিচ্ছবি।স্থানীয় কৃষক মো. এনামুল হক (৪১) ব্যতিক্রমী এই শস্যচিত্রটি তৈরি করেছেন। প্রতিবছর তিনি ধানক্ষেতে ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করেন। ২০২১ সালে প্রথম এক বিঘা জমিতে বেগুনি ধান রোপণ করে তিনি শুরু করেছিলেন এই যাত্রা। এরপর ২০২২ সালে ‘মা’ শব্দের শস্যচিত্র, ২০২৩ সালে জাতীয় পতাকার শস্যচিত্র এবং ২০২৪ সালে মানবদেহের হৃদপিণ্ডের প্রতিকৃতি তৈরি করেন। এবার ২০২৫ সালে শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন।কৃষক এনামুল বলেন, প্রথমে সুতা দিয়ে আবু সাঈদের অবয়ব তৈরি করি, এরপর সেই গঠন অনুযায়ী দুই জাতের ধানগাছ রোপণ করি। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন কৃষকও কাজ করেছেন। শহীদ আবু সাঈদকে স্মরণীয় করতেই এই উদ্যোগ নিয়েছি।তেলিহাটি গ্রামের জজ মিয়া বলেন, “এনামুল প্রতিবছর ব্যতিক্রম কিছু করেন। এবার শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। অনেক দর্শনার্থী এখানে এসে ছবি তুলছেন, স্মৃতি ধরে রাখছেন।”শস্যচিত্র দেখতে আসা এস এম জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পাশের গ্রামে এমন কিছু হয়েছে শুনে ছুটে এসেছি। চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছেন এই কৃষক।বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত রফিকুল ইসলাম রায়হান বলেন, “এটা শুধু একটি শস্যচিত্র নয়, এটি আন্দোলনের ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মের জানা উচিত, আর কৃষক এনামুল হক সেটাই করেছেন।”শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতির এই শস্যচিত্র ইতোমধ্যে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এটি শুধু কৃষি ও শিল্পের এক অনন্য মিশ্রণ নয়, বরং আন্দোলনের চেতনাকে সজীব রাখার এক অনন্য নিদর্শন।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর