রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তাহাজ উদ্দিন (৪৫)। পেশায় কৃষক। সাধারণ জীবনযাপন করতেন। কিন্তু স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকে বদলে যেতে থাকেন তিনি। একসময় যে মানুষটি মাঠে কাজ করতেন, সমাজের সঙ্গে মিশতেন, তিনি হয়ে পড়েন নিঃসঙ্গ, বিষণ্ণ। শেষ পর্যন্ত মানসিক অবসাদ তাঁকে ঠেলে দিল এক করুণ পরিণতির দিকে—গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলেন তাহাজ।কিছুদিন আগে স্ত্রীর সঙ্গে তাহাজ উদ্দিনের মনোমালিন্য হয়। পরিবারে ছোটখাটো ঝগড়া হতেই পারে, কিন্তু তাহাজের জীবনে এটি বড় ধাক্কা হয়ে আসে। স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান, এরপর আর ফেরেননি। তাহাজ অনেক বুঝিয়েছেন, অনুরোধ করেছেন, কিন্তু কিছুতেই লাভ হয়নি। পরবর্তীতে স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলে তাহাজ পুরোপুরি ভেঙে পড়েন।স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকে তাহাজ আর স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেননি। মানুষের সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দেন, কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। বিষণ্ণতা তাঁকে গ্রাস করতে থাকে। একসময় যেন জীবনের প্রতি সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।এলাকাবাসী বলছেন, তিনি আগে যেভাবে জমিতে কাজ করতেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টায় মেতে থাকতেন, তা একদমই বদলে যায়। নিজেকে গুটিয়ে নেন। আর শেষ পর্যন্ত এই মানসিক অবসাদ তাঁকে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।গত মঙ্গলবার ইফতারির আগ মুহূর্তে তাহাজ উদ্দিন গলায় ফাঁস দেন। ইফতারির পর তাঁর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পারেন। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা জানান, তাহাজের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। তবে পরিবার ও এলাকাবাসীর ভাষ্য, এটি আত্মহত্যা, এবং এর পেছনে বিষণ্ণতা ও একাকীত্বই মূল কারণ।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর