রাজশাহীর তানোরে এক ডিভোর্সী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছে, যা পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। প্রেমের প্রতিশ্রুতি, বিয়ের প্রলোভন এবং বিশ্বাসঘাতকতার মিশেলে এক নারীর জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ দুর্যোগ। সমাজের লজ্জার দায় এড়িয়ে অপরাধী যখন নিজেদের রক্ষার কৌশল নেয়, তখন ন্যায়বিচার পাওয়া আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামের এই ঘটনা শুরু হয়েছিল প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে। তিন মাস ধরে বিয়ের আশ্বাসে এক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন খায়রুল ইসলাম। প্রেমের নামে প্রতারণার এমন উদাহরণ নতুন নয়, তবে এই ঘটনার ভয়াবহতা আরও বেড়ে যায় যখন এলাকাবাসী হাতেনাতে ধরে ফেলেন অভিযুক্তকে।গত সোমবার (৩ মার্চ) রাতে ভুক্তভোগী নারীর বাড়ির পাশের একটি পুকুরপাড়ে দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান গ্রামবাসী। এমন পরিস্থিতিতে ধর্ষণের শিকার নারী সমাজের সহানুভূতি ও সহায়তা পাওয়ার পরিবর্তে ভয়, অপমান ও প্রতারণার শিকার হন।ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বাঁচতে প্রভাবশালী কিছু লোক সক্রিয় হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল মহুরি আলহাজ্ব সিদ্দিকের পুত্র মহুরি আল-আমিন ঘটনাস্থলে এসে জোরপূর্বক ধর্ষণকারী খায়রুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যান। শুধু তাই নয়, ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোনে থাকা সমস্ত প্রমাণ ডিলিট করে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।প্রমাণ নষ্ট করার এই অপচেষ্টা প্রমাণ করে যে সমাজের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অপরাধীদের রক্ষায় কতটা তৎপর। ফলে ন্যায়বিচারের পথ হয়ে ওঠে কঠিন, আর ভুক্তভোগীর কষ্ট আরও বেড়ে যায়।ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর অভিযুক্তের বাবা সাজ্জাদ যখন বলেন, “এ বয়সে এসব একটু হয়ে থাকে। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশের দরকার নাই। বিষয়টি গ্রামেই মীমাংসা করে নেব,” তখন এটি শুধু একটি অপরাধীকে রক্ষার প্রয়াসই নয়, বরং সমাজের দীর্ঘদিনের ভুল মানসিকতাকেও তুলে ধরে।এই বক্তব্য সমাজে বিদ্যমান ‘সমঝোতার’ নামে অপরাধ ঢেকে রাখার সংস্কৃতির নগ্ন প্রকাশ। এক নারীর সম্ভ্রমহানি, প্রতারণা, ধর্ষণ, এমনকি প্রমাণ নষ্টের মতো গুরুতর অপরাধকে হালকা করে দেখার প্রবণতা ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তবে সমাজে শক্তিশালী অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাধারণ নারীদের বিচার পাওয়ার লড়াই সহজ নয়।এই ঘটনা শুধু একজন নির্যাতিত নারীর নয়, এটি সমাজের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তার প্রশ্ন। এটি দেখিয়ে দেয়, কিভাবে প্রেমের নামে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও সহিংসতার শিকার হতে হয় নারীদের।এই প্রশ্ন আমাদের সবার—একজন নারী যখন বিশ্বাস করে, ভালোবাসে, আর প্রতারিত হয়, তখন তার ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ কেন এত কঠিন? সমাজ কি ধর্ষকের পক্ষে নাকি নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াবে?বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে কি আমরা অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে পারব? উত্তর খুঁজতে হবে আমাদেরই।এমআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
এবার নেই লঞ্চের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস, বাসের টিকিট শেষ
এবার নেই লঞ্চের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস, বাসের টিকিট শেষ

বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে এবারে ঈদ স্পেশাল সার্ভিস থাকছে না। যাত্রী সংকটে লোকসান এড়াতে মালিকরা যাত্রীদের ভীড় দেখার পর ঘাটে লঞ্চ Read more

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে

চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৫১ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের।

৭০০ টাকায় শুরু, ‘পুষ্পা’ অভিনেত্রীর প্রতিদিনের পারিশ্রমিক আড়াই লাখ
৭০০ টাকায় শুরু, ‘পুষ্পা’ অভিনেত্রীর প্রতিদিনের পারিশ্রমিক আড়াই লাখ

ভারতের দক্ষিণী সিনেমার অভিনেত্রী আনসুয়া ভরদ্বাজ। ১৯৮৫ সালের ১৫ মে তেলঙ্গানার হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন।

নেপালের ইতিহাস নাকি বাংলাদেশের প্রত্যাশিত জয়ের অপেক্ষা
নেপালের ইতিহাস নাকি বাংলাদেশের প্রত্যাশিত জয়ের অপেক্ষা

সেদিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নেপাল ১ রানের সমীকরণ মিলিয়ে ফেললে ‘ডি’ গ্রুপের সুপার এইটের লড়াইটা সত্যি-ই জমে যেত।

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন