By: Daily Janakantha
সেন্ট লুসিয়ায় টাইগারদের ভাগ্যে কি আছে?
খেলার খবর
22 Jun 2022
22 Jun 2022
Daily Janakantha
মোঃ মামুন রশীদ ॥ হার দিয়ে সিরিজ শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে চাপ থাকে বেশি। বাংলাদেশ দলের জন্য এই চাপ নিত্যসঙ্গী। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে এবারও বাংলাদেশ দলের জন্য চ্যালেঞ্জ সিরিজ হার ঠেকানোর। এ্যান্টিগায় সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় চতুর্থ দিন সকাল হতেই ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ দল। অধিনায়ক হিসেবে তৃতীয় দফায় সাকিব আল হাসান শুরু করেন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। তিনি নিজে সেটা ব্যাট হাতে উভয় ইনিংসে করতে পারলেও বাকি ব্যাটাররা পারেননি।
দুই ইনিংসেই ব্যাটারদের বাজে পারফর্মেন্স দেখে সাকিব নিশ্চিত হয়েই বলেছেন যে, ব্যাটারদের টেকনিকে সমস্যা আছে। সেই সমস্যা মাত্র ২ দিনে কাটিয়ে উঠে সেন্ট লুসিয়ায় সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে আহামরি কিছু করা কঠিন সফরকারীদের জন্য। তবে এই ভেন্যুতে আগে ২ টেস্টে অম্ল-মধুরতার মিশ্র অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ দলের। এবার অভিজ্ঞতাটা কেমন হবে? মঙ্গলবার এই ভেন্যুতে পৌঁছে ২ দিন নিজেদের ভুল শোধরানোর সুযোগ থাকবে সাকিবদের। কারণ ২ দিন অনুশীলন করেই শুক্রবার নামতে হবে দ্বিতীয় টেস্টে। সেখানে কি অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য? আবার স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণের বিপক্ষে লড়াই ব্যাটারদের।
সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত ৯ টেস্ট হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ খেলেছে ২ টেস্ট। ১টি হার দেখেছে ও ১টি ড্র করেছে।
২০০৪ সালে এই মাঠে প্রথমবার খেলতে নেমে হাবিবুল বাশার ও মোহাম্মদ রফিকের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৪১৬ এবং খালেদ মাসুদ পাইলটের সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৭১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এর মাঝে মুশফিকুর রহমান বাবু ও রফিকের দারুণ বোলিংয়ে ক্রিস গেইলের সেঞ্চুরির পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ৩৫২ রানে। ৩৩৬ রানের জয়ের লক্ষ্য ছোঁয়ার সুযোগ পায়নি ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ১১৩ রান তোলে তারা এবং এরপরই ম্যাচটি ড্র হয়। সেই ম্যাচটি আরও জমজমাট লড়াইয়ে শেষ হতে পারত যদি বৃষ্টির দাপটে অনেকগুলো ওভার নষ্ট না হতো। তবে এর ১০ বছর পর (২০১৪) দ্বিতীয়বার এই মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা ভাল হয়নি বাংলাদেশের। ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুই ইনিংসে ১৬১ ও ১৯২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার কারণে হারতে হয়েছে ২৯৬ রানের বড় ব্যবধানে। সেই সিরিজে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। সেন্ট লুসিয়া টেস্টটাই ছিল ক্যারিয়ারে সর্বশেষ টেস্ট খেলা এনামুল হক বিজয়ের। মুশফিকুর রহিম ছিলেন, ছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তারা দুজনই এবার নেই। তবে এখানেই আবার টেস্ট খেলার সুযোগ হতে পারে বিজয়ের। দ্বিতীয় টেস্টের দলে ইতোমধ্যেই যোগ দিয়েছেন তিনি। এবার সাকিবও আছেন এবং অধিনায়ক হিসেবে। এবার এখানে কি অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ দলের জন্য?
সেন্ট লুসিয়ায় আগের ৯ টেস্টে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের রেকর্ড তেমন ভাল নয়। মাত্র ১ টেস্ট জিতেছে তারা এই মাঠে, সেটি বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৪ সালে। ৪টি ড্র করেছে এবং বাকি ৪টিই তারা প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বাংলাদেশ দল এবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ে নামতে পারে। সফরকারী দলের পক্ষেই এই মাঠ তা অতীতের ঘটনাগুলোই বলছে। এই মাঠে সফরকারী দল হিসেবে একমাত্র পরাজিত দল বাংলাদেশ এবার কি অতীত পাল্টাতে পারবে? প্রথম টেস্টে বাংলাদেশী ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতার পর কাজটা বেশ কঠিন। টপঅর্ডারের কেউ সেভাবে ফর্মে নেই। এ্যান্টিগায় দুই ইনিংসে শুরুটা ভাল করলেও তা ধরে রাখতে পারেননি অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় ইনিংসে অনেক ধৈর্যশীল হয়ে ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, লিটন কুমার দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাটে শুধুই হতাশা। সাকিব দুই ইনিংসে ৫১ ও ৬৩ রান করে বাকিদের জন্য সাহস জুগিয়েছেন। তাছাড়া দীর্ঘ সময় পর উইকেটরকক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাট করে বাকিদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা হয়েছেন। তবে ক্যারিবীয় পেসারদের বিপক্ষে বিপর্যস্ত ব্যাটাররা নিজেদের কতখানি ফিরে পাবেন সেটাই শঙ্কার।
কারণ সেন্ট লুসিয়াতেও উইন্ডিজ পেসাররা ৯ টেস্টে ১১৩ উইকেট শিকার করে প্রতিপক্ষদের ভুগিয়েছেন। সফরকারী দলের পেসাররা সেখানে পেয়েছেন ৯০ উইকেট। সফরকারী-স্বাগতিক মিলিয়ে স্পিনাররা মাত্র ৭৫ উইকেট নিতে পেরেছেন। তাই এখানেও পেসারদেরই দাপট থাকবে। বাংলাদেশের পেসাররা এ্যান্টিগায় ভাল করেছেন। তবে এবার মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দিয়ে ইতোমধ্যে ইনজুরি কাটিয়ে দলের সঙ্গে যোগ হওয়া শরিফুল ইসলামকে খেলানো হতে পারে। আর চরম ব্যর্থ মুমিনুল হয়তো আরেকটি সুযোগ পেতে চলেছেন, কিন্তু শান্তর জায়গায় সুযোগ পেতে পারেন বিজয়।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ