By: Daily Janakantha
আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প
প্রথম পাতা
22 Jun 2022
22 Jun 2022
Daily Janakantha
জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পাকিস্তান সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে অন্তত এক হাজার জনের প্রাণহানি ও দেড় হাজার মানুষ আহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ৬ দশমিক এক মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ সময় লোকজন গভীরঘুমে মগ্ন থাকায় এবং ওই অঞ্চলে বেশিরভাগ মাটির ঘরের কারণে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত বেশি হয়েছে। ভূমিকম্পে এই অঞ্চলের কয়েক হাজার মাটির ঘর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
আহতদের উদ্ধারে উদ্ধারকারী দলের ব্যাপক তৎপরতা চলছে। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আহতদের হেলিকপ্টারে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। আফগানিস্তানের সরকারী সূত্র জানায়, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল খোস্ত শহর থেকে আনুমানিক ৪৪ কিলোমিটার দূরে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলেছে, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল মাটির ৫১ কিলোমিটার গভীরে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল কারিমি বুধবার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে মঙ্গলবার রাতে পাকতিকা প্রদেশের চার জেলায় ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। বহু বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। তালেবান নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, শ শ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি। খবরে উল্লেখ্য করা হয়েছে, গত দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে আঘাতহানা এই ভূমিকম্প সবচেয়ে ভয়াবহ। পাকতিকা প্রদেশের তালেবান কর্তৃপক্ষের তথ্য বিভাগের প্রধান মোহাম্মাদ আমীন হাজিফি বলেন, ভূমিকম্পে অন্তত এক হাজারজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে দেড়হাজারের বেশি মানুষ। তালেবান নেতারা ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তা দিতে ত্রাণ সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। স্থানীয় একজন ডাক্তার বলেন, পাকতিকার গায়ান ও বার্মাল জেলায় বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আখুন্দজাদার ডেপুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী শারফুদ্দিন মুসলিম বলেন, অন্তত এক হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলের গ্রামগুলো থেকে তথ্য আসতে দেরি হওয়ায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা বোঝা যাচ্ছে না। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন আইয়ুবি বলেন, নিশ্চিত মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনাই পাকতিকা প্রদেশে ঘটেছে। গভীর রাতে অধিকাংশ মানুষ বাড়িতে ঘুমিয়ে থাকায় হতাহতের সংখ্যা বেশি হয়েছে। তিনি বলেছেন, মৃত্যু আরও বাড়তে পারে। কিছু গ্রাম পর্বতের দুর্গম অঞ্চলে হওয়ায় সেখান থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে সময় লাগছে। কর্তৃপক্ষগুলো উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে আর আহতদের কাছে পৌঁছতে এবং চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। পাকিস্তানের পেশোয়ার শহরের এক বাসিন্দা বলেছেন, ভূমিকম্পটি শক্তিশালী ছিল।
আফগান গণমাধ্যমে আসা ছবিগুলোতে ভূমিধস, ধ্বংস হয়ে যাওয়া মাটির তৈরি বাড়িঘরের ছবি ও মাটিতে কম্বলে ঢাকা বেশ কয়েকটি মৃতদেহ দেখা গেছে। সঞ্চরণশীল ভূত্বকের সক্রিয় একটি অঞ্চলে অবস্থানের কারণে আফগানিস্তান ভূমিকম্পপ্রবণ। বেশ কয়েকটি চ্যুতি দেশটির ভূখণ্ডকে ভূতাত্ত্বিকভাবে কয়েকটি অংশে বিভক্ত করে রেখেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের ৫শ’ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে এই ভূ-কম্পন অনুভূত হয় বলে জানিয়েছে ইউরোপের ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র জানিয়েছে। কেন্দ্রটি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয়কারী কার্যালয় বলেছে, আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে গত ১০ বছরে সাত হাজারেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। প্রতিবছর গড়ে প্রাণ হারায় ৫৬০ জন করে।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ