By: Daily Janakantha
এ্যান্টিগায় ব্যাটিং নিয়ে খুবই হতাশ সাকিব
খেলার খবর
21 Jun 2022
21 Jun 2022
Daily Janakantha
শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখছেন, অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বললেন টেকনিকে সমস্যা। আত্মবিশ্বাস আর টেকনিক না থাকলে একজন ব্যাটসম্যানের আর কিই-ই বা থাকে? শূন্য! শূন্য মানে কিন্তু ইনিংসে ছয় ০; দল অলআউট ১০৩ রানে। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ইনিংসে ১ শ’তে গুটিয়ে যাওয়া দলের পরিণতি যা হতে পারে বাংলাদেশেরও তাই হয়েছে। বোলারদের জীবন-প্রাণ নিংড়ে দেয়া বোলিংয়ের পরও এ্যান্টিগা টেস্টে তিন দিনেই (চতুর্থ দিন সকালে) হার ৭ উইকেটে। টেস্টে বাংলাদেশের ব্যর্থতার ইতিহাসের বেশিরভাগই হতাশার ব্যাটিংয়ে মোড়ানো। এবারও বদলায়নি সেই ছবি। ৫১ ও ৬৩- দুই ইনিংস মিলিয়ে তিন হাফ সেঞ্চুরির দুটিই এসেছে সাকিবের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানের সম্মানজনক স্কোরে নুরুল হাসান সোহানের অবদান সর্বোচ্চ ৬৪, ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের ৪২। বাকি সবাই ব্যর্থ। টপ অর্ডারের বড় নাম, সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক যেন ব্যাট ধরতেই ভুলে গেছেন। সর্বোপরি ব্যাটিং নিয়ে যারপরনাই হতাশ অধিনায়ক।
‘টেকনিক্যালি সমস্যা আছে। আমার মনে হয় না টেকনিক্যালি সাউন্ড ব্যাটসম্যান আমাদের খুব বেশি আছে। আমাদের দলে যারা আছে, সবারই অনেক টেকনিক্যাল সমস্যা আছে। তবে একটা পথ বের করতে হবে যে কীভাবে রান বের করা যায়, কীভাবে ক্রিজে থাকা যায়। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ এ্যান্টিগায় প্রথম দিন প্রথম সেশনে ৪৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা যায়নি ঘুরে দাঁড়ানোর তাড়না। এবার ৬ উইকেট পড়ে ১০৯ রানে। কিছুদিন ধরেই এমন ব্যাটিং ধস দলের নিয়মিত সঙ্গী। গত জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে চমকপ্রদ জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে ক্রাইস্টচার্চে ২৭ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরে ১২৬ রানে শেষ হয় প্রথম ইনিংস। এরপর মার্চ-এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পড়ে ১০১ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ইনিংস শেষ হয় স্রেফ ৫৩ রানে। দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পড়ে ১২২ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে পড়ে ৬ উইকেট। ব্যাটসম্যানদের এই টেকনিক্যাল সমস্যা সমাধানে কোচিং স্টাফের সঙ্গে অধিনায়কের আলোচনা হয়েছে কিনা, এই প্রশ্নে সাকিবের সাফ উত্তর, দায়িত্বটি তার নয়, ‘এটা তো আমার আসলে আলোচনার বিষয় নয়। কোচেরই আলোচনা করার বিষয়। আমি যদি কোচিংও করাই, অধিনায়কত্বও করি, তাহলে তো সমস্যা। আমার যতটুকু কাজ, আমি ততটুকুতেই থাকলে ভালো হয়। আমার দায়িত্ব যতটুকু আছে, ততটুকু পালন করার চেষ্টা করব। বাকি যাদের যাদের যে অংশ আছে, তারা সবাই নিজের জায়গা থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে সবার জন্য সহজ হয়।’
সাদা পোশাকে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য এক সময় যাকে বাংলাদেশের ব্র্র্যাডম্যান ডাকা হতো সেই মুমিনুল অধিনায়কের দায়িত্বভার ছেড়ে দিয়েও নিজেকে খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রথম ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে আউট ৪ রানে। এ নিয়ে টানা ৯ ইনিংস দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে ব্যর্থ হলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অনেকেই বলছেন, মুমিনুলের কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম নেয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে অধিনায়ক সাকিবের বক্তব্য, ‘আমি যেটা বললাম যে পরের দুই তিন দিন বিশ্রাম আছে। এরপর যখন সেন্ট লুসিয়ায় অনুশীলন করব হয়তো সেদিন আমরা চিন্তা করতে পারব। যে আসলে আমাদের দলের জন্য কোনটা হলে ভাল হতে পারে। খুব যে বেশি পরিবর্তন করলে খুব বেশি যে ভাল কিছু হবে, সেটার নিশ্চয়তাও আপনি দিতে পারবেন না।’ ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার পরও ম্যাচ যেভাবে শেষ হয়েছে সাকিবের কাছে এটি প্রত্যাশিত, ‘সব মিলিয়ে আমি খুশি পুরো ম্যাচটা নিয়ে। এর চেয়ে খুব বেশি যে প্রত্যাশা ছিল, তা-ও বলব না। কিন্তু আমি মনে করি, আমাদের অনেক ভাল কিছু করার সামর্থ্য ছিল। সেই একটা সুযোগ আমরা হাতছাড়া করেছি। আরেকটু ভাল করতে পারতাম। প্রথম দিনের প্রথম সেশনের পর থেকে আমরা খেলায় পিছিয়ে ছিলাম। সব সময় রিকভারিতেই ছিলাম। কখনো আমরা সামনে যেতে পারিনি। ওটাই আফসোসের জায়গা।’
টস হেরে ব্যাটিং করা প্রসঙ্গে সাকিব বলেন,‘অবশ্যই এটা (টস) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তবে তা নিয়ে তো অভিযোগ করতে পারি না। এটা মেনে নিতেই হবে। আমাদের প্রয়োজন ছিল ভালো ব্যাটিং করা। উইকেট কঠিন ছিল বটে। তবে আমরা যদি আরও বেশি নিবেদন দেখাতাম, ৬ উইকেট না হারিয়ে ২টি হারিয়ে লাঞ্চে যেতাম, তাহলে আদর্শ হতো। ওই সেশনের পর থেকে উইকেট গত তিন দিন ধরেই ছিল ভালো। ওই এক সেশনই আমাদের খেলা শেষ করে দিয়েছে। আমরা ম্যাচে সবসময় পেছনে পড়ে থেকেছি। উন্নতির তাই অনেক জায়গা আছে।’ সেন্ট লুসিয়ায় শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া সিরিজ নির্ধারনী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ব্যাটসম্যানদের দিকেই তাঁকিয়ে অধিনায়ক,‘একটা জিনিস, এই ম্যাচের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের পারফরম্যান্সের আত্মবিশ্বাসটা নিয়ে যেতে পারব। আমাদের ১০০-১৫০ রান বেশি করতে হবে। খুব বেশি রান কিন্তু নয়। আমাদের প্রথম ইনিংসে কেউ রান করিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে বেশির ভাগ ব্যাটসম্যান রান করেনি। যদি আরও কিছু ক্রিকেটার অবদান রাখে, তাহলেই এই রানটা করা সম্ভব। এই রানটা হলে আমাদের যে বোলিং আক্রমণ আছে, আমার মনে হয়, আমরা অনেক বেশি লড়াই করতে পারব।’
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ