By: Daily Janakantha
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ৪ জনের মৃত্যু
শেষের পাতা
18 Jun 2022
18 Jun 2022
Daily Janakantha
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বর্ষা শুরু হলে বিশাল বহর নিয়ে পাহাড়ের অবৈধ বসতি সরাতে তৎপর হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর ও সরকারী বিভিন্ন তদারকি সংস্থা। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এ পাহাড়গুলোতে নিম্নআয়ের মানুষ প্রভাবশালীদের ঘরভাড়া দিয়ে বসবাস করে। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে বর্ষা মৌসুমে। শুক্রবার রাতের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধসে প্রাণহানি হয়েছে চট্টগ্রামের ৪ জনের। এর মধ্যে একই পরিবারের দুই বোনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। সরকারী সেবা সংস্থার সংযোগ থাকায় এবং প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় পাহাড় রক্ষায় সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবং পাহাড়ে বসতি স্থাপন ঠেকাতে না পারার কারণে প্রাণহানি বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা।
৪ জনের প্রাণহানি ॥ শুক্রবার রাত ১টার দিকে আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ও রাত ৩টার দিকে ফয়’স লেকের বিজয়নগর এলাকায় পাহাড়ধস হয়। এ বিষয়ে আকবর শাহ থানার ওসি ওয়ালি উদ্দিন আকবর জানান, রাত ১টার দিকে ১ নম্বর ঝিলের বরিশাল ঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসের সংবাদ পাওয়া যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শাহিনুর আক্তার (২৬) ও মাইনুল আক্তারকে (২৪) মৃত ঘোষণা করেন। রাত তিনটার দিকে ফয়’স লেকের লেকসিটি বিজয়নগর এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ করে। সেখানে লিটন (২৩) ও ইমন (১৪) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
৩০ পাহাড়ে কয়েক লাখ বসবাসকারী ॥ মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি পাহাড়ে কয়েক লাখ বসবাসকারী রয়েছে, যার মধ্যে সিংহভাগই নিম্ন আয়ের। পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন, দালান নির্মাণ করে পরিবেশের যে ক্ষতি চট্টগ্রামে হচ্ছে তা অপূরণীয়। পাহাড় কাটায় পিছিয়ে নেই সরকারী সংস্থাগুলো। পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে চট্টগ্রামে। খোদ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষই বায়েজিদ লিংক রোড নির্মাণ করেছে পাহাড় কেটে। অপরদিকে পাহাড়ধসের কথা জেনেও মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে স্বল্প ভাড়ায় পাহাড়ে বসবাসকারীরাও সেখান থেকে সরছে না। নামমাত্র কিছু উচ্ছেদ মাঝেমধ্যে হলেও পুরনো হাজার হাজার ঘরবাড়ি উচ্ছেদ হয়নি, বরং গড়ে উঠছে নতুন বসতি। এসবের নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারী বিভিন্ন সেবা সংস্থার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। চট্টগ্রামে অতীতে পাহাড়ধসের বহু ঘটনা ঘটেছে। প্রাণহানিও হয়েছে অনেক। এসব নিয়ে তদন্ত কমিটি এবং রিপোর্টও পেশ হয়েছে। কিন্তু রিপোর্টের বাস্তবায়ন নেই।
নগরীর আকবরশাহ থানার ফিরোজশাহ এলাকায় পাহাড় ধস হওয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, অতিবৃষ্টিতে পাহাড় ধস থেকে রক্ষায় সেখানে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে ১৬ জুন থেকে। জানমালের নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। মহানগরীতে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসকারীদের স্থাপনা অপসারণ এবং গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
The Daily Janakantha website developed by BIKIRAN.COM
Source: জনকন্ঠ